চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র হালদা নদীতে আবারও ভেসে উঠেছে বিপন্ন প্রজাতির একটি মৃত ডলফিন। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাউজান উপজেলার বিনাজুরি ইউনিয়ন আইডিএফ স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে ডলফিনটি উদ্ধার করা হয়।
মৃত ডলফিনটির ওজন ১২ কেজি। দৈর্ঘ্য প্রায় চার ফুট এবং প্রস্থ ২৮ ইঞ্চি। পচন শুরু হওয়ায় এটিকে মাটি চাপা দিয়েছে উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকেরা।
এর আগে সর্বশেষ ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর প্রায় ১৩ কেজি ওজনের আরেকটি মৃত ডলফিন উদ্ধার হয়েছিলো।
হালদা বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, নদীর উপরের দিকে কোথাও ডলফিনটি মারা যেতে পারে। ডলফিনটির গায়ে কয়েকটি আঘাতের চিহ্নও দেখা গেছে, ধারণা করা হচ্ছে ধারালো শক্ত কিছুর সাথে ধাক্কা লেগে আঘাত পেয়ে ডলফিনটি মারা গেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) হালদা রিচার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক, হালদা গবেষক ও চবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, হালদা নদী থেকে উদ্ধার এই মৃত ডলফিনটি ৪৪তম ডলফিন। ডলফিনটির গায়ে কয়েকটি আঘাতের চিহ্নও পাওয়া গেছে, যার থেকে অনুমান করা হচ্ছে যে ধারালো শক্ত কিছুর সাথে ধাক্কা লেগে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ডলফিনটি মারা যেতে পারে। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত পর্যালোচনা ও কারণ অনুসন্ধান করে প্রকৃত কারণ জানা যাবে। আর পচন শুরু হওয়ায় ডলফিনটিকে মাটি চাপা দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) হালদা রিসার্চ অ্যান্ড ল্যাবরেটরি সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী—এ বছর হালদা নদীতে প্রথম ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে। গত ছয় বছরে মৃত্যু হয়েছে মোট ৪৪টি ডলফিনের। এ পর্যন্ত ভেসে ওঠা মৃত ডলফিনগুলোর দু-একটি ছাড়া প্রায় সব কটিরই শরীরে আঘাতের চিহ্ন শনাক্ত হয়েছে।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) লাল তালিকাভুক্ত (অতি বিপন্ন প্রজাতি) জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী হলো ডলফিন। বিশ্বের বিভিন্ন নদীতে বিপন্ন প্রজাতির ডলফিন আছে মাত্র ১ হাজার ১০০টি। এর মধ্যে শুধু হালদাতেই রয়েছে ১৭০টি।
