২৪ অক্টোবর ২০২৫

হোটেল কক্ষে মা-মেয়ের মরদেহ; সন্তানসহ বাবা উধাও

কক্সবাজার প্রতিনিধি »

কক্সবাজারের আবাসিক হোটেল থেকে এবার মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কলাতলীর হোটেল-মোটেল জোনের হোটেল সী-আলিফের ৪১১ নম্বর কক্ষ থেকে শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা তিনটার দিকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। তবে, ঘটনার পর থেকে তাদের সাথে থাকা দুই ছেলেসহ বাবা রহস্যজনক ভাবে উধাও রয়েছেন। এমনটি জানিয়েছেন সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।

নিহত সুমা দে (৩৫) চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার নাথপুরা গ্রামের শচিন্দ্র দের মেয়ে। তিনি একই উপজেলার বানীগ্রামের বৈলগাও দীনেশ চন্দ্র মহাজান বাড়ীর জেবিন দের (৪২) স্ত্রী। তার সাথে মৃত বছর-দেড়েক বয়সী মেয়েটির নাম হোটেলের এন্ট্রি খাতায় লিপি নেই।

সী আলিফ হোটেলের ম্যানেজার মো. ইসমাইল বলেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে উঠেন জেবিন ও সুমা দে দম্পতি। তারা ঠিকানা উল্লেখ করেছিলেন চট্টগ্রামের বাঁশখালী এলাকায়। ১৭ ফেব্রুয়ারি তাদের রুম ছাড়ার কথা ছিল। সেই হিসেবে সকাল সাড়ে ১১ টায় কর্মচারী সাখাওয়াত ওই রুমে গিয়ে দেখেন স্ত্রী ও এক শিশুর মরদেহ পড়ে রয়েছে।

কর্মচারী সাখাওয়াত বলেন, সকাল সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত কোন সাড়াশব্দ না পাওয়ায় ওই রুমে গিয়ে কয়েকবার ডাকি। কিন্তু ভেতর থেকে সাড়া না পেয়ে ম্যানেজারের নির্দেশে মাস্টার কি (অতিরিক্ত চাবি) দিয়ে তালা খুলে দেখি নারী ও শিশুর মরদেহ পড়ে রয়েছে। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলেন, জেবিন ও সুমা দে স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে তিন সন্তান নিয়ে সী আলিফের ৪১১ নাম্বার কক্ষে উঠেছিলেন। হোটেল কক্ষ থেকে মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হলেও স্বামী এবং বাকি দুই সন্তান লাপাত্তা।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, নিহতদের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। বাঁশখালীতে বেতার বার্তা পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, কেন- কি কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে সেটি খতিয়ে দেখার জন্য সিআইডিসহ পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে আমরা নিহত নারীর স্বামী ও সন্তানদের খোঁজ করছি। তাদের পাওয়া গেলেই রহস্যজট খুলবে।

এর আগে-১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কক্সবাজার শহরের ‘সী বার্ড’ নামে আবাসিক হোটেলের কক্ষ থেকে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার হয়। হোটেলের ৩১০ নাম্বার কক্ষ থেকে মরদেহ পাওয়া নারীর নাম জেসমিন আক্তার (২৭)। তিনি বাগেরহাট এলাকার মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী বলে হোটেল রেজিস্টারে লিপি রয়েছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি শহরের বাজারঘাটাস্থ আবাসিক হোটেল সী-বার্ডের ৩১০ নং কক্ষে উঠেন জেসমিন আক্তার ও তার স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান। বুধবার দুপুরে স্বামী রুমের বাহির থেকে তালা দিয়ে চলে যান। হোটেল বয়েরা রুমের ভেতর আলো জ্বলতে দেখে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু সাড়া শব্দ না পেয়ে হোটেলের পক্ষ থেকে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। এর দুদিনের মাথায় কলাতলীর সী আলিফ হোটেল হতে মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন