বাংলাধারা প্রতিবেদন »
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা যাত্রীরা অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে ১ হাজার ৩৫৫ কেজি স্বর্ণ এনেছেন। এর ফলে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ২৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা। যা দেশের সবচেয়ে বড় রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ও বিমানবন্দরটির জন্য বড় একটি মাইলফলক। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলমের নির্দেশনায় চোরাচালান, রাজস্ব ফাঁকি বন্ধে কঠোর নজরদারি, রামেজিং (তল্লাশি) ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ায় বিমানবন্দর কাস্টমস টিম। তৎপর হয় বিভিন্ন সরকারি সংস্থার লোকজনও। অক্টোবরে ধরা পড়ে দুইটি বড় স্বর্ণের চালান। তারপর থেকেই বৈধভাবে ‘এক যাত্রী দুই বার’ নিয়মে ঘোষণা আসায় স্বর্ণ আনার হিড়িক পড়ে। মধ্যপ্রাচ্যের ফ্লাইট আসার পর ইমিগ্রেশন শেষে স্বর্ণের বার আনার ঘোষণা দেওয়া যাত্রীরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে কাস্টমস বুথ থেকে রশিদ সংগ্রহ করতে হয়।
বিমানবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মুনাওয়ার মুরসালীন এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বর্ণ চোরাচালান ও রাজস্ব ফাঁকি রোধে নজরদারি, যাত্রীদের তল্লাশি, স্ক্যানিং, যাত্রী ও ক্রু’রা প্লেন থেকে নামার পর প্রতিটি আসন, ওয়াশরুম তল্লাশি করা হচ্ছে।
গত ১ অক্টোবর দুবাই ফেরত এনামুল হক নামের এক যাত্রীর শরীর তল্লাশি করে ৮২টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। ২৪ ক্যারেটের ৯ কেজি ৫৯ গ্রাম ওজনের এসব স্বর্ণের দাম প্রায় ৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
এরপর ১৫ অক্টোবর দুবাই থেকে আসা ফ্লাইটের তিনটি আসনের নিচ থেকে কালো টেপে মোড়ানো ১৬০টি স্বর্ণের বার পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করা হয়। হতে পারে কাস্টমসসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির বার্তা চোরাচালানকারীদের কাছে পৌঁছে যাওয়ায় বৈধ পথে স্বর্ণের বার রেকর্ড পরিমাণ আসছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে-গত বাজেটে সরকার ব্যাগেজ রুল অনুযায়ী স্বর্ণের বার প্রতি রাজস্ব ৩০ হাজার টাকা কমিয়ে ২০ হাজার টাকা করেছে। এতে যাত্রীরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা যাত্রীরা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি স্বর্ণ আনছেন এটা সত্য। কিন্তু কেন এমনটি হচ্ছে সেটি প্রশ্ন। হতে পারে করোনার কারণে অনেকে বিদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য-চাকরি গুটিয়ে একেবারে চলে আসছেন বলেই শেষ সম্বল হিসেবে ২টি করে স্বর্ণের বার আনছেন। আবার এমনও হতে পারে নজরদারির কারণে চোরাচালানের কোটি কোটি টাকার স্বর্ণ জব্দ হওয়ায় চোরাকারবারিরা কৌশল পাল্টে বৈধ যাত্রীদের ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার এম ফরহাদ হোসাইন খান বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পলিসির কারণে মূলত বৈধপথে স্বর্ণ আনছেন যাত্রীরা। স্বর্ণ আসা যেমন বাড়ছে তেমনি রেমিট্যান্সও বাড়ছে। শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মধ্যপ্রাচ্যের চারটি ও কলকাতা মিলে ৫টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ফ্লাইট চালু রয়েছে। এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের রেমিট্যান্সযোদ্ধারাই দেশে ফেরার সময় সর্বোচ্চ ২টি করে স্বর্ণের বার আনছেন। এর আর্থসামাজিক অনেক কারণ থাকতে পারে।
বাংলাধারা/এফএস/ওএস/এআর













