আন্তর্জাতিক ডেস্ক »
বিশ্বজুড়ে গত ৫০ বছরে ৭০ শতাংশ বন্যপ্রাণী কমে গেছে। পরিবেশ ও প্রকৃতি নিয়ে আতঙ্কজনক এ তথ্য প্রকৃতিবিষয়ক গবেষকদের এক রিপোর্টে উঠে এসেছে। বন্যপ্রাণীর উধাও হয়ে যাওয়ার জন্য বনভূমি উজাড়, নানা ধরনের দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানুষের প্রকৃতিবিরোধী কর্মকাণ্ড ও প্রাকৃতিক সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহারকে দায়ী করা হয়েছে।
বন্যপ্রাণীবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়ার্ল্ডওয়াইড ফান্ড ফর ন্যাচার (ডব্লিউডব্লিউএফ) ও জিওলজিক্যাল সোসাইটি অব লন্ডন (জেডএসএল) যৌথভাবে ‘লিভিং প্ল্যানেট ইনডেক্স’ শীর্ষক সমীক্ষাটি করেছে।
বিশ্বজুড়ে যেসব প্রাণী পর্যবেক্ষণ করা হয়, সেই প্রাণীর সার্বিক বিশ্লষণে এ চিত্র উঠে এসেছে। ৫ হাজার ২৩০টি প্রজাতির ৩২ হাজার বন্যপ্রাণী নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে তারা। যেটি প্রতিষ্ঠানটির ২৪ বছরের ইতিহাসের মধ্যে সবচেয়ে বিশদ পর্যালোচনা।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, জীববৈচিত্র্য বিবেচনায় সবচেয়ে সমৃদ্ধ এলাকা ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল। এই দুই অঞ্চলে গত ৫০ বছরে প্রাণী কমেছে প্রায় ৯৪ শতাংশ; যা বিশ্বের যেকোনো অঞ্চলের তুলনায় সবচেয়ে বেশি।
বিশ্বে ১৯৭০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে গড়ে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা ৬৯ ভাগ কমে গেছে। এর মধ্যে একক দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্যে কমেছে ৫০ ভাগ, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। যুক্তরাজ্যে এখন স্কাইলার্কস এবং হেজহগ আর প্রতিদিন দেখা যায় না। সামুদ্রিক ঘাসের আবাসস্থল ৯২ ভাগ ও ৯৭ ভাগ বন্যফুলের তৃণভূমি চিরতরে হারিয়ে গেছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমাজনের গোলাপি ডলফিন। ১৯৯৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এর সংখ্যা ৬৫ ভাগ কমেছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ব্রাজিলের আমাজন কার্যকরী রেইনফরেস্টের বাইরে চলে যাচ্ছে। যেটি ছাড়া বৈশ্বিক হুমকি মোকাবিলা সম্ভব নয়।
রিপোর্টমতে, প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ১ কোটি হেক্টর বন উজাড় করে ফেলা হচ্ছে, যা প্রায় পর্তুগালের আয়তনের সমান। এর প্রভাবে জলবায়ু বিপর্যয়ের শঙ্কা ও খাদ্য নিরাপত্তা হুমকিতে পড়ছে।
জেডএসএলের সংরক্ষণ এবং নীতিবিষয়ক পরিচালক অ্যান্ড্রু টেরি বলেন, ভয়াবহভাবে বন্যপ্রাণী কমে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে এই বার্তা দেয়া হচ্ছে: প্রকৃতির সুরক্ষাবলয় ভেঙে যাচ্ছে এবং বিশ্বজুড়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে সবকিছু উজাড় হয়ে যাচ্ছে।













