রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী নদীতে ড্রেজিং কাজের জন্য ৫ দিন বন্ধ থাকার পর ফেরি চলাচল আবারও শুরু হয়েছে। রবিবার (১৮ মে) ভোর থেকে চন্দ্রঘোনা ফেরি সার্ভিস সচল হয়, যা সাময়িক স্বস্তি ফিরিয়েছে রাঙামাটি-রাজস্থলী-বান্দরবান সড়কে যাতায়াতকারীদের মাঝে।
এর আগে, সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের নির্দেশনায় গত ১৩ মে ভোর থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এতে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে যান চলাচলে চরম ব্যাঘাত ঘটে এবং দুর্ভোগে পড়ে হাজারো যাত্রী। ফেরি বন্ধ থাকায় কর্ণফুলী নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা ছিল ইঞ্জিনচালিত ছোট ছোট সাম্পান।
রাঙামাটি সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, “কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে ড্রেজিং কাজ চলছিল। তা শেষ হওয়ায় ফেরি চলাচল পুনরায় চালু করা হয়েছে।”
তবে স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, শুধু ড্রেজিং করে সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। বর্ষা মৌসুমে নদীতে মাটি জমে আবারও ফেরি চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে বলে শঙ্কা তাদের। অনেকেই বলছেন, জোয়ার-ভাটার কারণে ফেরির পাটাতন ডুবে গিয়ে ফেরি সচল থাকলেও কার্যত অচল হয়ে পড়ে। এসব ভোগান্তি দূর করতে কর্ণফুলী নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা।
এই সড়কে নিয়মিত যাতায়াতকারীরা জানান, প্রতিদিন ফেরি পার হতে গিয়ে তাঁদের মূল্যবান সময় নষ্ট হয়। কখনো ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, কখনো বা ফেরি বন্ধ থাকায় দিনভর আটকে থাকতে হয় নদীর পাড়ে।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “দেশে বড় বড় সেতু হচ্ছে, কিন্তু এখানকার মানুষ আজও ফেরির উপর নির্ভর করে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও কর্ণফুলীর এই অংশে সেতু নির্মাণে কোনো উদ্যোগ নেই।”
উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালে রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ চন্দ্রঘোনায় ফেরি সার্ভিস চালু করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের উৎপাদিত বাঁশ, কাঠ, ফলমূল, সবজি ইত্যাদি এই ফেরি দিয়েই দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করা হয়। তবে বান্দরবান, রাজস্থলী এবং কাপ্তাই থেকে চট্টগ্রাম কিংবা রাঙামাটির সাথে সড়ক যোগাযোগের জন্য এই ফেরি একমাত্র ভরসা হলেও তা যথেষ্ট নয়।
স্থানীয়রা মনে করেন, ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে যে সেতুর দাবি করে আসছেন, তার বাস্তবায়নই কেবল এই দীর্ঘমেয়াদি দুর্ভোগের সমাধান হতে পারে।
এআরই/বাংলাধারা