২৪ অক্টোবর ২০২৫

৯ লাখ টাকার গরু চাটগাঁইয়া এগ্রোতে!

তারেক মাহমুদ »

নাম তার ‘কিং’। তাকে এক নজর দেখার জন্য ছুটে আসছে মানুষ দূর দূরান্ত থেকে। চট্টগ্রামে আসন্ন কোরবান উপলক্ষে বরাবরের মতো এবারও বিপুল পশুর সমারোহ নিয়ে এসেছে চাটগাঁইয়া অ্যাগ্রো। এ ফার্মে রয়েছে বিভিন্ন জাত ও সাইজের গরু। আসন্ন কোরবান উপলক্ষে নজরকাড়া পশু ও ন্যায্য মূল্য নির্ধারণের কারণে চাটগাঁইয়া এগ্রোর প্রতি চট্টগ্রামবাসীর কৌতুহলও বাড়ছে। সম্প্রতি নগরীর কর্ণেল হাট উত্তর কাট্টলী রেল লাইনের পশ্চিমে চাটগাঁইয়া এগ্রোতে একটি গরুর দাম হাকানো হয়েছে ৯ লাখ টাকা।

জানা গেছে, ৯ লাখ টাকা দাম হাকানো গরুটির নাম রাখা হয়েছে ‘কিং’। এটি ইন্ডিয়ান অন গোল্ড জাতের গরু।

চাটগাঁইয়া এগ্রোর রিফাত ইকবাল বাংলাধারাকে জানান, ইন্ডিয়ান অন গোল্ড জাতের গরুটি কুষ্টিয়া অঞ্চল থেকে আনা হয়েছিল। ‘কিং’ প্রতিদিন সাইলেজ এবং ভূষি মিলিয়ে ১৮ কেজি খাবার খায়। গরুটির বয়স পাঁচ বছর। ৮৫০ কেজি ওজনের গরুটি দেখতে আসছেন অনেকেই।

রিফাত বলেন, আমরা চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুল সাড়া পাচ্ছি। অনেকেই আমাদের ফেসবুক পেইজ দেখে যোগাযোগ করছেন। এখন পর্যন্ত বেশকিছু গরু বিক্রি হয়েছে।

খামারের উদ্যোক্তা আবদুস সবুর লিটন বাংলাধারাকে জানান, এবার মানুষের আয়-রোজগার কম। তাই কোরবানির বাজেটও কম। তবে এবার দেশে চাহিদার তুলনায় অনেক উদ্বৃত্ত গরু রয়েছে। তাই দাম কমিয়ে হলেও সবাই চাইবেন বিক্রি শেষ করতে। আর আমাদের কোরবান হচ্ছে মহান আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির জন্য। এজন্য আমরা এই ব্যবসা শুধু মুনাফা অর্জনের জন্য করি না। মানুষ যেন ন্যায্য দামে উন্নত জাতের গরু ক্রয় করতে পারেন এটিই চাটগাঁইয়া এগ্রোর মূল লক্ষ্য।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে আবদুস সবুর লিটন বলেন, শুধু চট্টগ্রাম নয়, সারা বাংলাদেশে আমরা একটা লিডিং পজিশনে যেতে চাই। সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমাদের উৎপাদিত গরুর মাংস বাইরে রপ্তানী করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। আগামী বছর তিন’শ এর বেশি গরু পালন করার চিন্তা রয়েছে। গরু মোটা করার জন্য আমরা কোন ইনজেকশন বা ইউরিয়া ব্যবহার করি না। আগামী বছর আমেরিকা থেকে ব্রাহাম জাত, ব্রাজিল থেকে ইন্দো ব্রাজিল আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

ব্যবসায়ী আনোয়ারুল আজিম নামের এক ক্রেতা জানান, বিভিন্নজনের কাছে চাটগাঁইয়া এগ্রো’র ব্যাপারে প্রশংসা শুনেই এখানে গরু দেখতে এসেছি। এসেও বেশ স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থা দেখে ভাল লেগেছে। ইনশাল্লাহ সবকিছু মিললে এখান থেকেই গরু নিব।

‘প্রফিট ইজ দ্যা চিলড্রেন অব অনেস্টি এন্ড কোয়ালিটি’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে কাজ করছে চাটগাঁইয়া এগ্রো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে কোন আপোষ করছে না প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে এখানে সাতজন কাজ করছেন। সরকারের পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রেতাদের গরু প্রদর্শন করা হচ্ছে। ফার্মটি সব সময় জীবাণুনাশক দিয়ে পরিস্কার করা হচ্ছে। যারা কাজ করছে তারাও মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস পরে কাজ করছে এবং প্রতিনিয়ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিস্কার করছে।

চাটগাঁইয়া এগ্রো সাথে যোগাযোগের নম্বর- ০১৬৭১৬৯১২২১ (রিফাত)

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে কোরবান উপলক্ষে ৮ হাজার ৭১ জন খামারি ৬ লাখ ৮৯ হাজার ২২টি পশু উৎপাদন করেন। এর মধ্যে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭২টি গরু, ৫৭ হাজার ১৩১টি মহিষ, ১ লাখ ২৫ হাজার ৯৪৪টি ছাগল, ৪১ হাজার ২৬৬টি ভেড়া এবং ১০৯টি অন্যান্য পশু।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রেয়াজুল হক জানান, চট্টগ্রামে কোরবান উপলক্ষে পশুর চাহিদা মেটাতে এ বছর খামারিরা গরু-ছাগল মিলে ৬ লাখ ৮৯ হাজার ২২টি পশু উৎপাদন করেছেন। চট্টগ্রামে এবার পশুর চাহিদা রয়েছে ৭ লাখ ৩১ হাজারের মত।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম

আরও পড়ুন