৭ নভেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রামে ঘরে ঘরে বাড়ছে ‘চোখ ওঠা’ রোগী

নিজস্ব প্রতিবেদক »

হঠাৎ করেই চোখে ব্যাথা। চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে ফুলে আছে, পড়ছে পানি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে কনজাংটিভাইটিস বা চোখের আবরণ কনজাংটিভার প্রদাহ বলা হলেও সাধারণত ‘চোখ ওঠা’ নামেই এ রোগ পরিচিত। আর চট্টগ্রামে হঠাৎ করেই ছড়িয়ে পড়েছে ছোঁয়াচে এ রোগ। শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এ রোগে।

সরেজমিনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে, চোখ ওঠা রোগীরা ভিড় জমিয়েছেন সেখানে। যাদের মধ্যে রয়েছে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের রোগী। এদের সবাই সম্প্রতি এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

এদিকে এ রোগে আক্রান্ত অনেক স্কুল শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে দেখা গেছে। ছোঁয়াচে হওয়ায় সুস্থ শিক্ষার্থীদেরও এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ছে।

জানা যায়, অতিরিক্ত গরমের কারণে এ রোগের জীবাণু অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে ওষুধ ব্যবহারেও অনেক সময় এগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। রোগটির ক্ষতিকর বিষয় নির্ভর করে রোগের জীবাণুর ওপর। তবে নিজ থেকে এ রোগ ঠিকও হয়ে যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশগত কারণে বর্ষার শুরু ও শেষের দিকে চোখ ওঠা স্বাভাবিক। এ সময়ে আতঙ্কিত না হয়ে একটু সাবধানতা অবলম্বন করলে নিজেকে এবং পরিবারের সদস্যদের এ রোগ থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

হালিশহরের বাসিন্দা সুফি মোহাম্মদ ইউনুস এসেছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে একই রোগে আক্রান্ত হয়ে। তিনি বাংলাধারাকে বলেন, ‘গতকাল অফিস থেকে বাসায় আসার পর হঠাৎ দেখি চোখ চুলকাচ্ছে। এরপর কেমন অসস্তি অনুভূত হল। কিছুক্ষণ পর চোখ থেকে পানি পড়া আরম্ভ করল এবং চোখ লাল হয়ে গেল। তাই আজ ডাক্তারের কাছে এসেছি উপায়ন্তর না পেয়ে।’

এসময় মায়ের সঙ্গে ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় যাচ্ছিলেন বেপজা পাবলিক স্কুল ও কলেজের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী রুমা রহমান। তার মা বাংলাধারাকে বলেন, ‘ডাক্তার বলল, এটি ছোঁয়াচে রোগ। সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়ে মেয়ের জন্য কিছু চোখের ড্রপ ও ওষুধ লিখে দিলেন। গত পরশু থেকে মেয়েটার এ অবস্থা। স্কুলে যেতে পারছেনা। এখন দেখি, আল্লাহ্ ভরসা।’

চমেকের চক্ষু বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক বলেন, ‘এটি (চোখ ওঠা) খুবই সাধারণ ও পরিচিত একটি রোগ। ভাইস্রাস, ব্যাকটেরিয়া অথবা অ্যালার্জির কারণে এ রোগ হয়। কিছুদিন পর এ রোগ ভালও হয়ে যায়।’

‘কেউ আক্রান্ত হলে সময়মতো চিকিৎসা সেবা না নিলে দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে। তাই এ রোগে আক্রান্ত হলে সময়মতো চিকিৎসা নেয়াটা অত্যন্ত জরুরি। আর যেহেতু ছোঁয়াচে চোখ, তাই অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।’—যোগ করেন তিনি।

বাংলাধারা/আরএইচআর

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ