আন্তর্জাতিক ডেস্ক »
২৫ শে মে পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ইমরান খানের লংমার্চ ঠেকাতে বিভিন্ন সড়কপথে কনটেইনার ও বালুরট্রাক দিয়ে প্রতিবন্ধকতক সৃষ্টি করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। ইসলামাবাদ এর পুরো শহর অবরুদ্ধ করে দিয়েছে পাক সরকার। ইসলামাবাদে লংমার্চের ডাক দিয়েছে সদ্য বিদায়ী পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের সিনেটর ইজাজ চৌধুরী, পাঞ্জাবের জ্যেষ্ঠ নেতা মিয়া মেহমুদ উর রশিদসহ আরও কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পাক পুলিশ। দলটির লংমার্চকে সামনে রেখে মঙ্গলবার এ অভিযান চালানো হয়।
গত মাসে অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান সাবেক তারকা ক্রিকেটার ইমরান খান। ক্ষমতা হারানোর পর থেকে সারা দেশে গণসমাবেশ করে নতুন কোয়ালিশন সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা যাচ্ছেন তিনি। এর অংশ হিসেবে আজ বুধবার রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ ঘোষণা করেন ইমরান খান। এ লংমার্চ রুখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তানের নতুন সরকার। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দলের নেতা–কর্মীদের নিয়ে আগাম নির্বাচনের দাবিতে ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ চালিয়ে যাওয়ার ওয়াদা দিয়েছেন ইমরান খান।
গতকাল বেলা তিনটায় লংমার্চ শুরুর আগে থেকেই ইসলামাবাদ অবরুদ্ধ করে দেয় জোট সরকার। ইসলামাবাদ পাঞ্জাব সহ প্রদেশের বড় শহরগুলোয় প্রবেশের সব পথে পুলিশ ব্যারিকেড বসায়। রাজধানীতে পার্লামেন্ট ভবন, বিভিন্ন দেশের দূতাবাসসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা হয়েছে।
লংমার্চ ঠেকাতে দলটির জ্যেষ্ঠ নেতাদের ধরপাকড় শুরু করেছে দেশটির পুলিশ। গতকাল পাঞ্জাবের সাবেক জ্বালানিমন্ত্রী হাম্মাদ আজহার, উসমান দার ও বাবর আওয়ানের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। লাহোরে অভিযানে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হয়েছেন।
গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে জ্যেষ্ঠ পিটিআই নেতা মিয়া মেহমুদ উর রশিদকে গ্রেপ্তার করে পাক পুলিশ। জন আদেশ রক্ষণাবেক্ষণ আইন (এমপিও)–এর ১৬ ধারার আওতায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর আগে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী শাফকাত মেহমুদের বাড়িতেও অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তিনি বাড়িতে না থাকায় গ্রেপ্তার এড়াতে পারেন।
পুলিশের আগ্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে পাঞ্জাবে পিটিআইয়ের প্রেসিডেন্ট শাফকাত মেহমুদ এক টুইটারে বলেন, কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই পুলিশ তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে।
তিনি আরো লিখেন, ‘আমি সেখানে ছিলাম না। তাঁরা কি সত্যিই মনে করে এসব কৌশল ব্যবহার করে আমাদের ভয় দেখানো যাবে?’পরে পিটিআইয়ের মুখপাত্র দাবি করেন, সিনেটর ইজাজ চৌধুরীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত এলাকায় তাঁকে করা হয়েছে।
ইজাজ চৌধুরীর টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে করা এক পোস্টে জানান,’ তার বাসস্থানে শতাধিক পুলিশ অভিযান চালিয়েছেন। তার বাড়ির ফটক ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাঁর পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করা হয়েছে। পরিবারের সবার ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অবৈধ সরকারের এই ফ্যাসিস্ট আচরণ দিয়ে আমাদের স্পৃহাকে দমিয়ে রাখা যাবে না।
টিভিতে প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়, লংমার্চে অংশ নেওয়া মানুষদের ওপর পুলিশ লাঠিপেটা করেছে, কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে। অনেক জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ইমরানপন্থীরা। ভাঙচুর করা হয়েছে যানবাহন।
জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে গত ৯ এপ্রিল ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশজুড়ে গণসমাবেশ করেন ইমরান খান। এরপর ইসলামাবাদ অভিমুখে ২৫ মার্চ লংমার্চ -এর ডাক দেন তিনি। তিন মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন আদায়েরও অঙ্গীকার করেই পিটিআই চেয়ারম্যান এর এই আজাদী মার্চ।
তবে কবে নাগাদ নির্বাচন দেওয়া হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলছে না পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতৃত্বাধীন এই নয়া জোট সরকার।













