১২ নভেম্বর ২০২৫

লিফটে ওঠা নিয়ে তর্কাতর্কি : চমেকে চিকিৎসক-রোগীর স্বজনের মারামারি

বাংলাধারা প্রতিবেদন »

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের লিফটে ওঠাকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক, কর্মচারী ও রোগীর স্বজনের মধ্যে মারামারির পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে।

রবিবার (৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চমেক হাসপাতালের ৬ নম্বর লিফটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, অসুস্থ বোনকে দেখতে আসা নোয়াখালীর চাটখিলের রিয়াজুল অর্থপেডিকস বিভাগের এক চিকিৎসককে মারধর করছেন।

অন্যদিকে রিয়াজুলের স্ত্রী আয়েশা বেগম অভিযোগ করে বলেন, রিয়াজুল চিকিৎসককে মারেনি, বরং চিকিৎসকরাই রিয়াজুলকে মারধর করেছে। পরে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, সন্তান প্রসবজনিত সমস্যা নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছয়তলার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন রিয়াজুলের বোন। সেই ওয়ার্ডে যাওয়ার জন্য লিফটে ওঠা নিয়ে চিকিৎসক-হাসপাতাল কর্মচারীদের সঙ্গে রিয়াজুলের মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান গণমাধ্যমকে বলেন, চিকিৎসক ও স্টাফদের জন্য বরাদ্দ করা লিফট দিয়ে অর্থপেডিকস বিভাগের চিকিৎসক মিজানুর রহমানসহ স্টাফরা যাচ্ছিলেন। লিফট ভর্তি ছিল। তবুও রিয়াজুল লিফটে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করেন। লিফটম্যান রিয়াজুলকে অন্য লিফটে যাওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু রিয়াজুল এ লিফটেই যেতে চান।

তিনি আরও বলেন, এ নিয়ে লিফটম্যানের সঙ্গে রিয়াজুলের তর্ক চলে। চিকিৎসক মিজানুর বলেন, লিফটে তো লেখা রয়েছে এটা চিকিৎসক ও হাসপাতালের স্টাফদের জন্য। তখনই রিয়াজুল আপনি কে- বলে চিকিৎসকের কলার চেপে ধরেন। অন্যরা তাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন। এরই ফাঁকে চিকিৎসক কয়েকটি কিল ঘুষি মারেন রিয়াজুল। এ সময় তার (চিকিৎসকের) শার্ট ছিঁড়ে যায় এবং শরীরে খামচি লাগে। চিকিৎসক মিজানুর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর। অনেক ভালো মানুষ। চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রাজিব পালিত বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। রিয়াজুলকে চিকিৎসক ও হাসপাতালের কেউ মারধর করেননি।

রিয়াজুল ইসলামের স্ত্রী আয়েশা বেগম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, অসুস্থ বোনকে দেখতে স্বামী রিয়াজুল তাকে নিয়ে দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত ওঠেন। সিঁড়িতে কাজ চলায় দ্বিতীয় তলায় লিফটের বোতাম চামে দেন। লিফটে তারা উঠতে চাইলে, লিফটের কর্মচারী জানান, এটি চিকিৎসকদের লিফট। ওঠা যাবে না। এই সময় লিফটম্যান তাদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেন। তখন রিয়াজুল শুধু বলেন, আপনি কাজটি ভালো করেননি। লিফটে পাবলিক ঢুকিয়েছেন অথচ বলছেন চিকিৎসকের লিফট। সঙ্গে সঙ্গে টি শার্ট পড়া একজন রিয়াজুলের শার্টের কলার ধরে লিফটে ঢুকিয়ে ফেলেন। সঙ্গে লিফটম্যান তার ঘাড়ে ও পিঠে মারধর করতে থাকেন। পরে চারতলার একটি রুমে নিয়েও রিয়াজুলকে মারধর করা হয়।

তিনি বলেন, এরপর আমার স্বামীকে পুলিশ ধরে থানায় নিয়ে গেছে। তবে আমরা অভিযোগ দিতে গেলে কোনো অভিযোগ নেয়নি পুলিশ।

এদিকে খবর পেয়ে ভুক্তভোগী রিয়াজুল ইসলামের খালাতো ভাই ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপসচিব) মোয়াজ্জেম হোসেন চমেকে যান। তিনি বলেন, আমি গেছি ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে। কিন্তু চমেকের পরিচালক আমার কথা না শুনে, উল্টো যারা মারধর করেছে তাদের পক্ষ নেন। থানায় গেলেও পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। আমরা এই বিষয়ে আদালতে যাব।

পাঁচলাইশ থানার ওসি (তদন্ত) সাদেকুর রহমান বলেন, চমেক হাসপাতালের লিফটে এক চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর স্বজনের হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রিয়াজুল ইসলাম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ