৭ নভেম্বর ২০২৫

হোটেল ম্যানেজারকে অপহরণ, মুক্তিপণের টাকাসহ র‍্যাবের জালে ২ যুবক

বাংলাধারা প্রতিবেদক »

মো. মাহবুব আলম (৩৫)। পেশায় তিনি একজন রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার। দুই বছর আগে রিংকু (২৫) নামে এক তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয় কাজের সুবাদে। এরপর থেকে রিংকু প্রায়ই আসা-যাওয়া করতো রেস্টুরেন্টে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে তৈরি হয় বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সর্বশেষ গতকাল দুপুরে ওই তরুণীর ভাই মানিকের ভাড়া বাসায় বেড়াতে যান মাহবুব। আপ্যায়নের এক পর্যায়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে স্থানীয় দুই যুবকসহ কয়েকজন সেই বাসায় প্রবেশ করে এবং মাহবুবকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করে। এরপর মাহবুব প্রতিবাদ করলে তাকে ওই দুই যুবক মারধর করে আটকে রেখে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। কিন্তু সেই মুক্তিপণের টাকাসহ হাতেনাতে র‍্যাবের জালে ফেঁসে যায় ওই দুই যুবক।

সোমবার (৪ জুলাই) পাহাড়তলী থানার দক্ষিণ কাট্টলি এলাকার ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে দুই অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-৭। এসময় ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় ভুক্তভোগী মাহবুবকে এবং বিকাশে পাঠানো টাকাসহ মুক্তিপণের মোট দুই লাখ ৩৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার দুই যুবক হলো— পাহাড়তলী থানার ১১নং দক্ষিণ কাট্টলি এলাকার মো. রাব্বি চৌধুরী প্রকাশ শাওন (২৭) এবং একই এলাকার মৃত তসলিম চৌধুরীর পুত্র মো. কায়সার চৌধুরী (২৬)।

র‍্যাব জানায়, ভুক্তভোগী মাহবুব তার বন্ধবি রিংকুর ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে যাওয়ার আধ ঘণ্টা পরেই সেখানে শাওন ও কায়সারসহ কয়েকজন প্রবেশ করে তাকে গালাগালি করতে থাকে এবং মারধর করে। এক পর্যায়ে তার কাছে থাকা মোবাইল ও মানিব্যাগে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর এশিয়া, সোনালী ও এনআরবি ব্যাংকের ৩টি ডেভিড কার্ডের পিন কোড নম্বরের জন্য মারধর করতে থাকে তাকে। মাহবুব ব্যাংকের পিন কোড নম্বর দিতে গড়িমশি করলে আসামি রাব্বি, কায়সার ও আবদুল তাদের হাতে থাকা কাঠের লাঠি দিয়ে মারধর করে এবং বলে ডেভিড কার্ডের পিন নম্বর লাগবে না, নগদ ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দিলে তাকে ছেড়ে দিবে।

এরপর ভুক্তভোগী মাহবুব তার ভাই আলম এবং বন্ধু মো. আশরাফুজ্জামান শাওনের কাছে মোবাইলে ফোন করে কান্নাকাটি করে নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়ে ওই স্থানে যেতে বলে। টাকা নিয়ে যেতে দেড়ি হওয়ায় অপহরনকারীরা বিকাশে টাকা পাঠাতে বলে। কথামত, মাহবুবের ভাই ও বন্ধু বিকাশে নগদ ৩০ হজার ৬’শ টাকা পাঠায়। এরপর ৫ লাখ টাকা যোগাড় করতে না পেরে দুই লাখ টাকা নিয়েই রওনা দেয় তারা।

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র‍্যাব-৭) সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার বাংলাধারাকে বলেন, ‘টাকা নিয়ে যাওয়ার আগে মাহবুব তার বড় ভাই আলম এবং বন্ধু শাওন আমাদের বিষয়টি অবগত করে। এরপরই তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের একটি আভিযানিক দল তাদের সাথে বর্ণিত ঠিকানায় যায়। তখন ভুক্তভোগী মাহবুবের বড় ভাই আলম আসামি রাব্বির হাতে টাকার ব্যাগ দিলে সে টাকা গুনতে শুরু করে। ঠিক ওই সময়ে দুই অপহরণকারীকে নগদ দুই লাখ ৩৬ হাজার টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় ভুক্তভোগী মাহবুব এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল, মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া আসামিদের মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে পাঠানো ৩৬ হাজার টাকা এবং নগদ দেয়া ব্যাগভর্তি দুই লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।’

‘গ্রেফতার দুই আসামি এবং উদ্ধারকৃত আলামত পাহাড়তলী থানায় পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে হস্তান্তর করা হয়েছে।’— যোগ করেন র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

বাংলাধারা/আরএইচআর

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ