৭ নভেম্বর ২০২৫

উত্তাল চবি ক্যাম্পাস, শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন

বাংলাধারা প্রতিবেদক »

নিরাপদ ক্যাম্পাস ও ছাত্রী হেনস্তার বিচার দাবিতে ক্লাস বর্জন করে সাধারণ শিক্ষার্থী ও প্রগতিশীল ছাত্র জোটের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও মানবন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অবস্থান নেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে বিভিন্ন বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষককেও অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

এর আগে বেলা ১১ টায় ক্লাস বর্জন করে প্রথমে বিজ্ঞান অনুষদ ও পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এর পর তারা শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে একত্রিত হন।

বিক্ষোভকারী রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বেশ কিছু দিন যাবৎ পরপর ছাত্রী হেনস্তার কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর কোনো সঠিক বিচার করছে না। বিপরীতে এসব ঘটনাগুলোকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা আমাদের নিজেদের ক্যাম্পাসেই নিরাপদ নয়। আমরা ক্যাম্পাসে আমাদের সার্বিক নিরাপত্তা চাই। সেই সঙ্গে ছাত্রী হেনস্তার তদন্তপূর্বক সঠিক বিচার চাই।

রসায়ন বিভাগের সাজিয়া আহমেদ নামে এক ছাত্রী বলেন, ‘যে ঘটনার বিচার চার ঘন্টার মধ্যে হওয়ার কথা ছিল সে ঘটনার চার দিন পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন কিছু করতে পারেন নি। ক্যাম্পাসকে আমরা আমাদের বাড়ির মতো মনে করি। এখানে প্রশাসন আমাদের অভিভাবক। আমাদের বাড়িতে আমাদের আমাদের অভিভাবকরাই আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না। এরকম অভিভাবক থেকেই বা কী লাভ?’

এর আগে গতকাল রাত সোয়া ৯টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত উপাচার্যের বাস ভবনের সামনে অবস্থান নেন ছাত্রীরা। এসময় তারা ৪ দফা দাবি জানান।

দাবিগুলো হলো—

১. বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও মেডিকেল সেন্টারে প্রবেশের সময়সীমা তুলে নেয়া ও ক্যাম্পাসে ২৪ ঘন্টা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ২. যৌন নিপীড়ন সেল ভেঙে নতুন কার্যকরী যৌন নিপীড়ন সেল গঠন করতে হবে। এবং গঠিত সেলে বিচার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ সময় থাকবে একমাস। এক মাসে বিচার নিশ্চিত করণে ব্যর্থ হলে যৌন নিপীড়ন সেল নিজে শাস্তির আওতাভুক্ত হবে। ৩. যৌন নিপীড়ন সেলে বর্তমান চলমান কেইসগুলো আগামী চার কার্যদিবসের মধ্যে সমাধান করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ৪. বর্তমান চলমান ঘটনাগুলোর বিচার আগামী ৪ কার্যদিবসের মধ্যে করতে না পারলে প্রক্টরিয়াল বডির সবাইকে পদত্যাগ করতে হবে।

লিখিত আকারে পেশকৃত এসব দাবি মেনে নেয়ার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান স্বাক্ষর করলে ছাত্রীরা রাত সাড়ে ১২টার পর হলে ফিরে যান। আজ বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দলোন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। শহীদ মিনার থেকে তারা সরে প্রক্টর অফিসের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।

এর আগে রোববার (১৭ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হল সংলগ্ন এলাকায় ৫ জন দুর্বৃত্তের হাতে শারীরিক হেনস্তার শিকার হন এক ছাত্রী। ওই সময় তার সঙ্গে থাকা তার বন্ধুকেও মারধর করা হয়। ছিনিয়ে নেওয়া হয় মোবাইল ফোন। পরে এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিলে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যৌন নিপীড়নের এ ঘটনার জেরে ছাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের হলে প্রবেশের ব্যাপারে সময়সীমা বেঁধে দেয়। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন করে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ