সুরাইয়া রহমান তন্নী »
প্রতি বছর বর্ষার মৌসুম এলেই বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটছে। বর্ষা মানেই যেন পাহাড় ধস। কাঠচুরি, পাহাড়ি বন উজাড় আর পাহাড় কেটে মাটি চুরি চলতে থাকায় চট্টগ্রাম বিভাগে পাহাড় ধসের ট্রাজেডি বেড়েই চলেছে। দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। অপরিকল্পিতভাবে মাটিকাটা পাহাড়গুলো আশেপাশে বসাবসকারী লাখ লাখ মানুষের জন্য ‘মৃত্যু ফাঁদ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চট্টগ্রামে আবহাওয়ার অধিদপ্তরের আজকের (২৪ জুলাই) র্পূবাভাস অনুযায়ী, অস্থায়ী দমকা হাওয়া সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এলাকায় অনেক জায়গায় মাঝারি ভারী থেকে ভারী র্বষণও হতে পারে।
চলতি আষাঢ়ের মৌসুমে প্রতিদিনই কখনো দিনে কখনো রাতে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। টানা এই বর্ষণ পাহাড়ি জনপদের জন্য নিয়ে এসেছে বিপদসংকেত। ভারি বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের শঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের হিসেবে বন্দর নগরী ও আশেপাশের এলাকায় ২৭টি পাহাড়ের পাদদেশে বসতি আছে। এর মধ্যে ৩৮৫টি স্থাপনাকে এবার অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গতমাসের শুক্রবার (১৭ জুন) মধ্যরাতে আকবর শাহ থানার বরিশাল ঘোনা ১ নম্বর ঝিল পাড় এলাকায় পাহাড় ধসে দুই বোন নিহত হন। আহত হন তাদের মা-বাবা। এছাড়া বিজয় নগর এলাকায় পাহাড় ধসে নিহত হন আরও দুইজন। এর পরের দিন শনিবার ১ নম্বর ঝিল পাড় এলাকায় পাহাড় ধসে একটি সেমিপাকা ঘর ভেঙে প্রাণহানি হয়। এর আশেপাশের একই এলাকায় পাহাড়ে আরও শতাধিক ঘর আছে।
পাহাড় ধসে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় ২০১৭ সালে। ওই বছর ১২ ও ১৩ জুন রাঙামাটিসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের পাঁচ জেলায় পাহাড় ধসে প্রাণ হারান ১৫৮ জন। স্মরণকালে ভয়াবহ ট্রজেডি ঘটে ২০০৭ সালে। ওই বছরের ১১ জুন টানা বর্ষণের ফলে চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে ১২৭ জনের মৃত্যু হয়।
এভাবেই প্রতিবছর বর্ষা মিত্যুর ঝুঁকি নিয়ে আসে পাহাড়ি জনপদে। কিন্তু তারপরও পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস বন্ধ হয় না। বছরের পর বছর এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও দীর্ঘস্থায়ী কোন ব্যবস্থা নেয় না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিছু সময়ের জন্য প্রশাসনের তৎপরতা চোখে পড়ে। সময় যত গড়ায় তৎপরতাও তত শিথিল হয়ে যায়। বরং বর্ষাকালে প্রবল বৃষ্ঠি শুরু হলে এসব বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে তোড়জোড় শুরু হয়।













