বাংলাধারা প্রতিবেদক»
রোহিঙ্গা নাগরিক আসমত উল্লাহ (২৪)। ১০ বছর আগে বাংলাদেশে এসে অবস্থান নেন কক্সবাজারে। এরপর তার মা ছহুরা খাতুনসহ শুরু করেন ইয়াবার ব্যবসা। আর সেই ব্যবসার লাভের টাকায় সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে স্বর্ণের বার ও বিস্কুট উখিয়া-টেকনাফ ক্যাম্পসহ সারাদেশে পাচার শুরু করে। অবৈধ স্বর্ণসহ র্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানায় মা-ছেলে।
শনিবার (৩০ জুলাই) সকাল ১০ টায় সীতাকুণ্ডের ছলিমপুর ইউনিয়নের ১০ নম্বর জঙ্গল ছলিমপুর এলাকার একটি ভাড়া ঘরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব-৭ এর সদস্যরা।
এসময় চোরা চালানের মাধ্যমে আনা ৮টি স্বর্ণের বার, ৫টি স্বর্ণের চেইন, ১ জোড়া স্বর্ণের বালা, ৩ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ৩টি স্বর্ণের আংটি, ৪টি স্বর্ণের লকেট উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- মৃত মোজাহের আহমেদের পুত্র আসমত উল্লাহ (২৪) এবং তার মা মোছাঃ ছহুরা খাতুন (৬৮)। তারা দুজনেই রোহিঙ্গা নাগরিক।
র্যাব জানায়, ইয়াবার বিক্রির লভ্যাংশ দিয়ে রোহিঙ্গারা সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে স্বর্ণের বার ও বিস্কুট উখিয়া ও টেকনাফ ক্যাম্পসমূহে পাচার করে আসছে এবং পরবর্তীতে তা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিচ্ছে- এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওই দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এম এ ইউসুফ বলেন, ‘আমরা মাদক কারবারিদের সূত্র খুঁজতে গিয়ে এই স্বর্ণ চোরাকারবারিদের সন্ধান পাই। এরপর জঙ্গল ছলিমপুর এলাকার একটি ভাড়া ঘরে অভিযান চালিয়ে এই রোহিঙ্গা মা-ছেলেকে গ্রেফতার করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসামিদের দেয়া তথ্য মতে ঘরের ভিতর থাকা সানসেডের ওপরে একটি প্লাষ্টিকের বাটির ভেতর লাল শপিং ব্যাগ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় থাকা চোরাচালানের মাধ্যমে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আনা ৮টি স্বর্ণের বার, ৫টি স্বর্ণের চেইন, ১ জোড়া স্বর্ণের বালা, ৩ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ৩টি স্বর্ণের আংটি, ৪টি স্বর্ণের লকেট উদ্ধার করি।’
গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিক। ২০১২ সালে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং সর্বশেষ তারা জঙ্গল সলিমপুর অবস্থান করে এই অপরাধমূলক কাজ করে যাচ্ছিল। আসামি আসমত উল্লাহ ২০১৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত কক্সবাজার জেলার ইদগাহে অবস্থান করে একই বছর এজেন্সির মাধ্যমে তার এলাকার চাচা আব্দুস সালামের সহায়তায় পাসপোর্ট করে।’
‘এরপর ভিসা দিয়ে তাকে সৌদি আরবে নিয়ে যায়। সৌদি আরবে সে ২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সালে আগষ্ট মাস পর্যন্ত অবস্থান করে। এরপর সে অবৈধভাবে অবস্থান করায় পুলিশ কর্তৃক ধৃত হয় এবং তাকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। বাংলাদেশে আসার পর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সে বিয়ে করে ইদগাহ হতে স্ত্রী ও মাসহ জঙ্গল সলিমপুর আগমন করে।’ বলেন তিনি।
অধিনায়ক লে. কর্ণেল এম এ ইউসুফ বলেন, ‘উদ্ধারকৃত স্বর্ণের আনুমানিক মূল্য এক কোটি ৫৩ হাজার টাকা। গ্রেফতার আসামি এবং উদ্ধারকৃত আলামত পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’
বাংলাধারা/আরএইচআর/এসকে













