রাঙামাটি প্রতিনিধি »
প্রধান দুইটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে একই স্থানে একই সময়ে রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন করার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি এড়াতে রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। শনিবার(২৭ আগস্ট) রাতে এই গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
কাপ্তাই উপজেলা সদরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), কাপ্তাই উপজেলা শাখা এবং কাপ্তাই উপজেলার ৫নং ওয়াগ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ ও উপজেলা ছাত্রলীগের প্রাক্তন নেতৃবৃন্দ একই জায়গায় সমাবেশ ডাকাকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর অবস্থা এড়াতে কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে বলে জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৮ আগস্ট (রোববার) উপজেলা সদর বড়ইছড়ি এলাকায় জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, পরিবহন ভাড়াসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কাপ্তাই উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।

অন্যদিকে একই স্থানে একই সময়ে কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে তারেক জিয়ার ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করবেন মর্মে সংবাদ পাওয়া গেছে। তাই দুইটি বৃহত্তর রাজনৈতিক দলের আহুত কর্মসূচীর কারণে জনজীবনে অসুবিধা ও উপজেলার স্বাভাবিক শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা ও আশংকা রয়েছে।
তাই জনস্বার্থে কাপ্তাই উপজেলায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে রোববার সকাল ৬টা হতে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কাপ্তাই উপজেলা সদর এবং এর আশেপাশের এলাকায় সকল প্রকার সভা-সমাবেশ, মিছিল, লোক সমাগম, চার বা ততোধিক ব্যক্তির একত্রে চলাচল এবং আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী সকল অবৈধ কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অত্র উল্লিখিত স্থানে ১৮৯৮ সালের ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
এই বিষয়ে রাতে যোগাযোগ করা হলে কাপ্তাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি লোকমান আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মামুন বলেন, ‘বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসাবে আমরা এই বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিই। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে জাতীয়তাবাদী দলের চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান শামীমসহ জেলা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এই সমাবেশের জন্য আমরা লিখিতভাবে কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করি এবং মৌখিকভাবে অনুমতি নিই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে আশ্বস্থ করেছিলাম যে, একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ করব। কিন্তু গতকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারলাম, একই স্থানে একই সময়ে সরকারি দলের একটি ছাত্র সংগঠন সমাবেশের ডাক দেয়। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এই ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় এদেশে গণতন্ত্রের চর্চা নাই। গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে, মানুষের বাক স্বাধীনতা হনন করা হয়েছে। ১৪৪ ধারা জারির মাধ্যমে এদেশে গনতন্ত্রকে নস্যাৎ করা হচ্ছে। এসব করে বিএনপির কর্মসূচিকে বন্ধ করা যাবে না।’
এদিকে রাতে কাপ্তাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম নুর উদ্দিন সুমন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ আর লিমন এবং ওয়াগ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়েদ হোসেন জাবেদ গণমাধ্যমকে জানান, আগুন সন্ত্রাসের ঠিকানা, কাপ্তাই উপজেলায় হবে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কাপ্তাই উপজেলা শাখার সাবেক নেতৃবৃন্দদের উদ্যোগে রোববার বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত বিক্ষোভ মিছিলে কাপ্তাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দের উপস্থিত থাকার জন্য জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উপরোক্ত বিষয়ে জানতে চাইলে কাপ্তাই থানার ওসি জসিম উদ্দিন জানান, যেকোনো নাশকতা, দাঙ্গা হাঙ্গামা ও অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধ করতে এবং শান্তি শৃঙ্খলার স্বার্থে পুলিশ মাঠে থাকবে।













