২৪ অক্টোবর ২০২৫

স্ত্রী-সন্তানসহ এমপি জাফরকে দুদকে তলব

কক্সবাজার প্রতিনিধি »

চকরিয়া-পেকুয়া (কক্সবাজার-১) আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম এবং তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব দিতে ডেকেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ২৪ আগস্ট কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন তাঁদের আলাদা চিঠি পাঠান।

সেই চিঠিতে এমভ জাফর আলম, তাঁর স্ত্রী শাহেদা বেগম, ছেলে তুহিন আলম ও মেয়ে তানিয়া আফরিনকে ৪ সেপ্টেম্বর দুদক কক্সবাজার কার্যালয়ে হাজির হয়ে সম্পদের হিসাব দিতে বলা হয়েছে।

দুদকের সমন্বিত কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আগামীকাল রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে জাফর-শাহেদা দম্পতি এবং তাঁদের দুই সন্তানকে দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে নিজেদের সম্পদের বিবরণ দিতে বলা হয়েছে। তদন্তে অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে দুদক আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জাফর আলমের স্ত্রী শাহেদা বেগম চকরিয়া পৌরসভার পালাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। স্কুলশিক্ষক থেকে শাহেদার রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়া নিয়ে সম্প্রতি অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখালেখি করেছেন। বিষয়টি দুদককে খতিয়ে দেখতে বলেন ফেসবুকে এসব বিষয় উল্লেখকারিরা।

দুদকের নোটিশে সংসদ সদস্য জাফর আলমের ক্ষমতা ও প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে স্ত্রী শাহেদা বেগম সরকারি জমি, চিংড়ি ঘের, জলমহাল দখল, মাদক কারবার, চাঁদাবাজি এবং অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ আনা হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হলেও দীর্ঘদিন কর্মক্ষেত্রে তাঁর অনুপস্থিত থাকার কথাও উল্লেখ করা হয়।

তবে শাহেদা বেগমের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে দুদকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। স্কুলে অনুপস্থিতি থাকলেও তিনি একজন প্যারা টিচার নিয়োগ দিয়েছেন।

শাহেদা পাল্টা প্রশ্ন করেন, একজন নারীর পক্ষে সরকারি জমি, চিংড়ি ঘের, মাদক কারবার, চাঁদাবাজি করা কী কখনো সম্ভব?

স্ত্রী ও সন্তানদের সম্পদের অনুসন্ধানকে ‘চিহ্নিত মহলের ষড়যন্ত্র’ দাবি করে সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেছেন, দুদকের তদন্তে তাঁর পরিবার পূর্ণ সহযোগিতা করবে।

এর আগে, গত ২১ জুলাই দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (অনু: ও তদন্ত-৫) খান মো. মাজানুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক স্মারকে সংসদ সদস্য জাফর আলমের স্ত্রী শাহেদা বেগমের সম্পদ তদন্তের নির্দেশনা দেয়া হয়।

দুদকের সেই স্মারক সূত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, শাহেদা বেগমের বিরুদ্ধে সরকারি জমি দখল, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি এবং অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদক সমন্বিত কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়।

এরই প্রেক্ষিতে এমপির পরিবারকে সম্পদের বিবরণ দিতে ৪ সেপ্টেম্বর সজেক কক্সবাজারে ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক সূত্র।

আরও পড়ুন