বাংলাধারা প্রতিবেদক»
চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজে অন্যের হয়ে ‘প্রক্সি’ দিতে এসে ধরা খেয়েছে মো. সোহাগ হোসেন নামে চবির সাবেক শিক্ষার্থী। মামলার ঝামেলা এড়াতে শুধুমাত্র মুচলেকা নিয়েই ওই শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) ডিগ্রী ৩য় বর্ষের অ্যাকাউন্টিং পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, মূল পরীক্ষার্থীর নাম মহিম আজম। তিনি ওমর গনি এমইএস কলেজের শিক্ষার্থী। প্রক্সি দিতে আসা সোহাগ হোসেন নিজেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী বলে দাবি করেছেন।
প্রথমে দাবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর
চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল সালমা রহমান বাংলাধারাকে বলেন, ‘পরীক্ষা শুরুর পর রেজিস্ট্রেশন কার্ডের ছবির সঙ্গে অমিল থাকায় সোহাগ নামে ওই ব্যক্তিকে আটক করি আমরা। এরপর সে জানায় ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রক্সি দিতে এসেছিলেন তিনি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্ট্রোলার স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। মূল শিক্ষার্থী আর পরীক্ষা দিতে পারবেনা।’
তিনি বলেন, ‘খুলশী থানার ওসির সঙ্গেও কথা হয়েছে। আটক ওই ব্যক্তি নিজ হাতে অপরাধ স্বীকার করে মুচলেকা দিয়েছে। এরপর তাকে থানায় হস্তান্তর কথা হয়েছে। সেখান থেকে জিডি হবে।’
পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা
তবে, এ ধরণের ঘটনা শুনেছেন কিন্তু কাউকে থানায় হস্তান্তর করা হয়নি বলে দাবি খুলশী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা। তিনি বাংলাধারাকে বলেন, ‘এ ধরণের খবর শুনেছি আমি। হস্তান্তরের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।’
মামলার ঝামেলা এড়াতে মুচলেকায় মুক্তি
এ বিষয়ে জানতে পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত খুলশী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ইকবাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কেন আমাদের কাছে হস্তান্তর? আমরা বলছি মামলা দেয়ার জন্য। ওনারা বলছে তারা বাদী হবেনা, মামলা দিবেনা। আমরা কি এ ধরণের আসামি ছাড়তে পারি?’
আপনিসহ ৩ জন পুলিশের জিম্মায় ছাড়া হয়েছে বলে দাবি ভাইস প্রিন্সিপালের—উত্তরে ইকবাল হোসেন বলেন, ‘ওনারা অফিস থেকেই ছেড়ে দিছে মুচলেকা নিয়ে। এরপর এরা আমাদের পেছন পেছন হেঁটে চলে গেছে। আমি যাচ্ছি এখন ওনার কাছে।’
সুর পাল্টালেন ভাইস প্রিন্সিপাল
কিছুক্ষণ পর প্রতিবেদককে ফোন করে এএসআই ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমি ওনাদের (ভাই প্রিন্সিপাল) বলেছি থানায় গিয়ে মামলা করেন। তারা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) বলল বাদী হবেনা। এরপর বললাম তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট ডেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত করেন। ওনারা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) বললেন, আমাদের মুচলেকা নেয়া আছে, ক্ষমা চেয়েছে।
‘এরপর ওনারা ওসি স্যারের পরামর্শে আটক ওই ছেলের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে জিডি করার জন্যে থানায় পাঠাইছে। এখানে যেভাবে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে, আমি কি আসামি নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দিতে পারি?’
এরপর ভাইস প্রিন্সিপাল তার সামনেই আছে জানিয়ে মুঠোফোন তাকে ধরিয়ে দেন। ভাইস প্রিন্সিপাল সালমা রহমান বলেন, ‘আমার স্টাফকে জিজ্ঞেস করার পর সে জানিয়েছে আসামি পুলিশের সঙ্গে গিয়েছে। তার ভিত্তিতে আমি ওই কথা বলেছি আপনাকে। মুচলেকা নেয়ার পর আটক ওই শিক্ষার্থী চলে গেছেন। এখন একটা জিডি করতে পাঠিয়েছি থানায়।’
বাংলাধারা/আরএইচআর













