২৪ অক্টোবর ২০২৫

ভবনের ভেতরেই বিপজ্জজনক বৈদ্যুতিক খুঁটি, তড়িতাহত হয়ে মৃত্যুশয্যায় শ্রমিক

রাউজান প্রতিনিধি »

চট্টগ্রামের রাউজানে নবনির্মিত একটি ভবনের ভেতরেই রাখা হয়েছে বিপজ্জনক বৈদ্যুতিক খুঁটি। দুই তলা বিশিষ্ট ভবনটির ছাদের মাত্র তিন ফুট উপর দিয়ে গেছে ৩৩ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক লাইন।

এমন অপরিকল্পিত ভবনটির অবস্থান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নের চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক সংলগ্ন দক্ষিণে। ভবনটির মালিক বেতাগী ইউনিয়নের আব্দুল হক নামে এক ব্যক্তি।

জানা গেছে, ভয়ানক ঝুঁকি থাকা সত্বেও কোনো প্রকার তদন্ত ছাড়া অনেকটা দায়সারাভাবে ভবনটিতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেন চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২। পল্লী বিদ্যুতের এমন দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ডে হতভম্ব এলাকাবাসী।

এদিকে, গত বুধবার (১২ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার সময় ভবনের ছাদে কাজ করতে গিয়ে শান্ত দত্ত (২৬) নামে এক শ্রমিক তড়িতাহত হয়ে বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুশয্যায় রয়েছেন।

আহত শান্ত দত্ত রাউজান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়ন দক্ষিণ দেওয়ানপুর গ্রামের কাঞ্চন দত্তের ছেলে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ জানে আলম ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

সুফিয়া নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ওইদিন দুপুরে ভাত খেতে বসেছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে বের হয়ে দেখি ভবনটির ছাদে এক শ্রমিক বৈদ্যুতিক শকে আহত হয়েছে। পরে লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

স্থানীয় ওমর ফারুক বলেন, বছর পাঁচেক আগে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের পাশেই গাছের বৈদ্যুতিক খুঁটি ছিল। পরে সেখান থেকে সরিয়ে ২৫ ফুট দূরে স্থাপন করা হয়। বছর দুয়েক আগে ভেতরে রেখেই ভবনটি নির্মাণ করেন এর মালিক। এটি বেআইনি হলেও পল্লী বিদ্যুৎ কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো কর্তৃপক্ষ বাধা দেয়নি।

একই এলাকার সায়েদুর রহমান বলেন, ছাদের মাত্র তিন ফুট উপর দিয়ে ৩৩ হাজার ভোল্টের লাইন গেলেও কোনো কভার মোড়ানো হয়নি। চুয়েট এলাকায় এমন অনেক ঝুঁকিপূর্ণ ভবন আছে। যেকোনো সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ একেবারে দায়সারা বলা চলে।

জানা গেছে, ভবনটির মালিক একজন প্রবাসী। ফলে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জিএম সরোয়ার জাহান বলেন, বিষটি তদন্ত করে দেখব। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে সাথে নিয়ে এ সমস্যার সমাধান করব।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের সাত জুলাই একই ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের একটি ভবনের ছাদ থেকে আম পাড়ার সময় পাঁচ ফুট দূরে থাকা ১১ হাজার ভোল্টের লাইনে স্পৃষ্ট হয়ে সানজিদা চৌধুরী নামে এক তরুণীর মৃত্যু হয়।

এর আগে বছর চারেক আগেও চুয়েট এলাকার একটি ভবনের দ্বিতীয়তলায় কাজ করতে গিয়ে ৩৩ হাজার ভোল্টের লাইনে বিদ্যুস্পৃষ্ট হয়ে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া এই এলাকায় সংশ্লিষ্ট ছোট-বড় ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে।

আরও পড়ুন