৭ নভেম্বর ২০২৫

কথিত হিজরতে ‘ট্যুরিস্ট বেশে’ বান্দরবানের গহীনে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিচ্ছে তরুণরা

বাংলাধারা ডেস্ক »

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য জেলার বান্দরবান। এ জেলার পর্যটন স্পটগুলোতে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটকের আনাগোনা হয়। বছরের প্রায় সবসময়ই থাকে অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় ও পাহাড় প্রেমীদের ভিড়।

সম্প্রতি গুরুত্বপূর্ণ এই পর্যটন এলাকাকে কেন্দ্র করে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও জঙ্গি সংগঠনের অপতৎপরতার বিষয়টি এখন আলোচনায়।

জানা গেছে, যেখানে কথিত হিজরতের নামে ঘরছাড়া অর্ধশতাধিক তরুণ অবস্থান করছে। কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এবং তাদেরই নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সংগঠিত হওয়ার এই বিষয়টি এখন আশঙ্কার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জঙ্গি সংগঠনটির ডাকে হিজরতে বের হওয়া তরুণদের বান্দরবানে পাঠানো হচ্ছে ট্যুরিস্টের বেশে। সংগঠনের হিযরতকৃত সদস্যদের সমন্বয়কের মাধ্যমে সর্বশেষ দুইধাপে প্রায় ২৯ জনকে ট্যুরিস্টবেশে সেখানে পাঠানোর তথ্য পাওয়া গেছে।

এ অবস্থায় প্রায় এক মাস ধরে দুর্গম পার্বত্য এলাকার গহীনে যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গত ৬ অক্টোবর থেকে মুন্সীগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ, ময়মনসিংহ, যাত্রাবাড়ী, কেরানীগঞ্জ, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান এলাকায় অভিযান চালিয়ে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ২২ জনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) কুমিল্লার লাকসাম থেকে আরও চারজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

এরমধ্যে সংগঠনটির অর্থ বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক মুনতাছির আহম্মেদ ওরফে বাচ্চু, সারাদেশে হিযরতরত সদস্যদের সার্বিক সমন্বয়ক আব্দুল কাদের ওরফে সুজন ওরফে ফয়েজ ওরফে সোহেল ও ইসমাইল হোসেন ওরফে হানজালা ওরফে মানসুর। আর সামরিক শাখার তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তি হেলাল আহমেদ জাকারিয়া।

গ্রেফতার সোহেল ও হানজালাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব জানায়, তারা সংগঠনের আমীর মাহমুদের একান্ত সহযোগী ও সারাদেশে হিজরতকৃত সদস্যদের সার্বিক সমন্বয়ক ছিলেন। তারা বিভিন্নদেশে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনসহ ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়ে অপব্যাখ্যা দিয়ে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে আগ্রহী করে তুলতেন। কুমিল্লা থেকে নিরুদ্দেশ তরুণরা উগ্রবাদের উদ্বুদ্ধ হওয়ার পর তাদের মাধ্যমেই ঘর ছাড়তে আগ্রহী হয়।

তারা সারাদেশে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া সদস্যদের তাত্ত্বিক ও সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানোর কার্যক্রম সমন্বয় করতেন। পটুয়াখালী, ভোলাসহ সমতলের বিভিন্ন এলাকায় প্রশিক্ষণ শেষে সদস্যরা তাদের সহযোগিতা ও তত্ত্বাবধানে কুমিল্লাতে তাদের সেইফ হাউসে অবস্থান করতেন।

পরে সুবিধাজনক সময়ে তারা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় হিজরতকৃত সদস্যদের পর্যটক বা অন্যান্য ছদ্মবেশে পার্বত্য অঞ্চলে প্রশিক্ষণ শিবিরে পাঠাতেন। তারা গত মার্চ-এপ্রিলের দিকে ১৭ জন এবং সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ১২ জন তরুণকে পর্যটকের ছদ্মবেশে বান্দরবানে পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।

বান্দরবানের ভেতরের দিকে যেতে হলে এনআইডির প্রয়োজন হয়, এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, জঙ্গি সংগঠনটির নির্দেশনা অনুযায়ী সদস্যদেরকে ঘর ছাড়ার আগে সঙ্গে আসল জাতীয় পরিচয়-পত্র (এনআইডি) রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া, এনআইডির সকল কপি ধ্বংস করে দিতে বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে তারা সেখানে গেলে তাদের কাছে এনআইডি দেখতে চাওয়া হলে হয়তো ট্যুরিস্ট হিসেবে তারা সেটি দেখাতে পারে।

সূত্র : বাংলানিউজ

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ