কক্সবাজার প্রতিনিধি »
কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে জেলের জালে ধরা পড়েছে ৩০ কেজি ওজনের দুটি পোয়া মাছ। কুলে তুলে আনা মাছ দুটির ওজন ৫৭ কেজি বলে জানিয়েছেন জেলেরা।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সকালে দ্বীপের উপকূলে স্থানীয় জেলে আবদুল গণিদের জালে পোয়া মাছ দুটি ধরা পড়ে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, সোমবার রাতে দ্বীপের বাসিন্দা আবদুল গণির নেতৃত্বে পাঁচ জেলে বঙ্গোপসাগরের মাছ শিকারে যান। মঙ্গলবার ভোরে দ্বীপের পশ্চিম পাড়াস্থল সাগরে জাল তুললে দুটি বড় পোয়া মাছ পাওয়া যায়। মাছ দুটি নিয়ে দ্বীপের জেটি ঘাটে ফিরে আসার পর উৎসুক মানুষের ভিড় জমে। ধরা পড়া ৫৭ কেজি ওজনের পোয়া মাছ দুটি দ্বীপের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মাছ দুটি তিন লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হাঁকান। জেলেরা তাদের না দিয়ে বেশি দামে বিক্রির উদ্দেশে টেকনাফে নিয়ে যান। সন্ধ্যা পর্যন্ত মাসগুলো বিক্রি হয়নি বলে জেনেছি। পর্যাপ্ত দাম না পেলে রাতে তা কক্সবাজার নিয়ে যাওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন জেলে গণি।
সূত্র মতে, জেলে গণির জালে এর আগে ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর ৩৪ কেজি ওজনের একটি পোয়া মাছ ধরা পড়ে, যা বিক্রি হয় ১০ লাখ টাকায়। এরপর ২০২০ এর নভেম্বর মাসে এসে গণির জালে আবারো ধরা পড়া পোয়া মাছ বিক্রি হয় ৬ লাখ টাকায়। আর চলতি বছরের নভেম্বরে এসে আবারও জোড়া পোয়া মাছ ধরা পড়ল তার জালে।

অপরদিকে, টেকনাফের নাফ নদীর ট্রানজিট জেটিতে ফেলা বড়শিতে ধরা পয়েছে এক জোড়া কোরাল মাছ। এদের মাঝে বড় কোরালটির ওজন ১৮ কেজি, ছোটটির ১২ কেজি। ৩০ কেজি ওজনের কোরাল দুটির দাম হাঁকা হচ্ছে ৩৬ হাজার টাকা। সোমবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া এলাকার জেলে মোহাম্মদ রিয়াজের বড়শিতে মাছ দুটি ধরা পড়ে। পরে পৌর বাসস্টেশন বাজারে মাছ দুটি ২০ হাজার টাকায় কিনে নেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নতুন পল্লানপাড়ার মাছ ব্যবসায়ী কবির আহমদ। পরে ওই ব্যবসায়ী মাছ দুটি এক হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে ৩৬ হাজার টাকা দাম হাঁকান।
জেলে রিয়াজ বলেন, রোহিঙ্গা ঢলের পর হতে নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। গোপনে বড়শিতে অনেকে মাছ ধরছেন। টেকনাফ পৌরসভার ট্রানজিট ঘাটের জেটিতে বসে বিকেলে বড়শি ফেলেন। ঘণ্টাখানেক পর বড়শি টেনে তুলে দেখি একটি কোরাল মাছ আটকা পড়েছে। যার ওজন ছিল ১২ কেজি। এরপরে আবারও বড়শি ফেলে শেষবারে আরও একটি মাছ আটকা পড়ে। যার ওজন ছিল প্রায় ১৮ কেজির মতো। ইদানীং নাফ নদীতে জেলেদের বড়শিতে কোরাল মাছ আটকা পড়ছে।
টেকনাফ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, পোয়া মাছের পেটের ভেতর ‘পদনা’ নামে (স্থানীয় ভাষায় ‘ফুলা’ বলে) বিশেষ অংশ থাকে। যা ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এই ‘পদনা’ শুকিয়ে ওষুধের কাঁচামাল হিসেবে বিদেশে উচ্চমূল্যে বিক্রি করা হয়। ফলে পোয়া মাছের দাম ও চাহিদা বেশি।
তিনি আরো বলেন, কোরাল সাধারণত ৩০ থেকে ৩৫ কেজি ওজনের হয়। কোনো কোনো সময় এর চেয়ে বেশি ওজনের কোরাল পাওয়া যায়। প্রজনন মৌসুমসহ সরকারি বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা মেনে চলায় নাফ নদীতে এখন বড় বড় কোরাল মাছ পাওয়া যাচ্ছে।













