৮ নভেম্বর ২০২৫

জৌলুস হারিয়ে দায়সারা গোছে মাঠে গড়াচ্ছে বিপিএল

বাংলাধারা প্রতিবেদন »

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের চাকচিক্য নেই। বিদেশি তারকা ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতিতে আগ্রহ হারাচ্ছে দর্শকরাও। একসময় আইপিএলের পর দ্বিতীয় সেরা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ বলে গলা ফাটানো বিসিবি (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) কর্তারাও এখন আর বিপিএল নিয়ে উচ্চকণ্ঠ নন।

যারা নিয়মিত ক্রিকেট খেলা দেখেন এবং খোঁজখবর রাখেন তাদের দৃষ্টিতে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ, ‘দায়সারা গোছে চলে’। এক সময় দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়েও এখন জৌলুস হারিয়ে নামমাত্র একটা টুর্নামেন্টে পরিণত হয়েছে বিপিএল। ‘বাংলাদেশ পেইন লিগ’, ‘বকেয়া প্রিমিয়ার লিগ’, ‘বিতর্ক প্রিমিয়ার লিগ’ ইত্যাদি খেতাব ভাগ্যে জুটেছে বিপিএলের। ক্রিকেটার থেকে সংগঠক, বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমর্থকরা প্রায়ই সমালোচনা করে থাকেন। নানা বিতর্ক আর অব্যবস্থাপনায় রীতিমতো আইসিইউতে আছে দেশের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটি।

আইপিএলের আদলে বিপিএলটা মূলত ছিল বিসিবির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের মস্তিষ্কপ্রসূত। ২০১২ সালে এই টুর্নামেন্ট চালু করার মূল উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় ক্রিকেটারদের টি-টোয়েন্টির পারফরম্যান্সে উন্নতি আনা। বিশ্বের বড় বড় ক্রিকেটারের সঙ্গে একই ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করে তাদের টি-টোয়েন্টিজ্ঞান ঋদ্ধ হবে, অনেক কিছু শিখবেন, জানবেন- এই ছিল আশা। তবে এরইমধ্যে একযুগ পার করা টুর্নামেন্টটি কতটা সফল?

যত বড় খেলোয়াড় তত বড় ছাড়!

দেশের ক্রিকেটপাড়ায় একটা গুঞ্জন আছে, যত বড় খেলোয়াড় তত বড় ছাড় দেয়া হয়। চলতি বিপিএলে যেমন ম্যাচ শুরুর আগমুহূর্তে এসে সময় পরিবর্তন, আম্পায়ার বিতর্ক কিংবা নানা অব্যবস্থাপনার চিত্র দেখা গেছে তেমনি মাঠেও খেলোয়াড়দের পেশাদারিত্বের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। এখানে বিসিবির কঠোর না হওয়াকে দুষছেন সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিকরা।

জোড়াতালির টুর্নামেন্ট

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্রিকেটেও সংযোজন ঘটছে নতুন নতুন প্রযুক্তির। তবে বিপিএল কর্তৃপক্ষের যেন তাতেই বয়েই গেছে দশা। আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তকে আরও নির্ভুল করতে এখন প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টে ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) প্রযুক্তি থাকা অত্যাবশ্যক। তবে বিপিএলের চলতি আসরে কাজ চলছে এডিআরএস দিয়ে। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে যখন বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ডিআরএস কেন ব্যবস্থা করেনি তারা? তখন তারা জানিয়েছিল, সীমাবদ্ধতার কথা।

কেন আগ্রহ হারাচ্ছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো

সিলেট সিক্সারস, সিলেট সানরাইজার্স, সিলেট থান্ডার এবং সিলেট স্ট্রাইকার্স। বছর বছর বদলে যায় ফ্রাঞ্চাইজি আর পাল্টে যায় দলের নামও। ক্রিকেট সমর্থকরা তো বটেই, খোদ বিপিএল কাভার করা সাংবাদিকরাও হিমশিম খান দলের নাম ব্যবহার করতে গিয়ে। আপনার প্রশ্ন জাগতে পারে কেন আগ্রহ হারায় বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো? উত্তরটাও হয়তো আপনার জানা। ভারতের আইপিএল কিংবা পাকিস্তানের পিএসএলের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলো ব্যবসাসফল টুর্নামেন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও একযুগেও এগোয়নি বিপিএল।

অন্ধকারে আশার আলো

মিরপুরের মরা উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড় ছাড়াও খোদ দেশি ক্রিকেটারদেরও ক্ষোভ ঝারতে দেখা যায়। তবে চলতি বিপিএলে এখন পর্যন্ত মিরপুরের উইকেট নিয়ে সবার মাঝেই সন্তুষ্টি। প্রতি ম্যাচেই রান পাচ্ছেন ব্যাটাররা। টি-টোয়েন্টির জন্য আদর্শ উইকেটে তরুণ ক্রিকেটারদের ঝলকও দেখা যাচ্ছে। চলতি বিপিএলে ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়ানো তৌহিদ হৃদয়ের নাম এ তালিকায় প্রথমেই থাকবে।

সাকিবের বোমা ও বিসিবির শাক দিয়ে মাছ ঢাকা

বিপিএলের মান নিয়ে সাকিবের বিস্ফোরক মন্তব্যের পর বিসিবির নীতিনির্ধারক মহল থেকে বারবার ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকার’ চেষ্টা চলেছে। তবে সাকিবের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন দেশের সফলতম অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। বিপিএলকে যা-তা বলেছিলেন সাকিব, আর মাশরাফীর মতে, হ-য-ব-র-ল বিপিএল। চলতি আসর শুরুর আগে ম্যাশ বলেন, ‘পরিবেশ দেখলে আপনার তা-ই ( হ-য-ব-র-ল) মনে হবে। কারণ এক মাঠে ৬-৭ দল অনুশীলন করছে। এ বিষয়ে শুরু থেকে সমন্বয় করতে হবে।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ