৮ নভেম্বর ২০২৫

চমেক হাসপাতালে ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধি বাতিলের দাবি ক্যাব’র

বাংলাধারা প্রতিবদেক »

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (চমেক) হঠাৎ করে কিডনি ডায়ালাইসিসের মূল্যবৃদ্ধি ও এর প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীদের ওপর ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায়’ ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়ে ডায়ালাইসিস’র মূল্যবৃদ্ধি বাতিলের দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম।

বিপুল সংখ্যক মৃত্যুপথযাত্রী কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী ও প্রতিবাদকারীদের ওপর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হামলাকে ন্যাক্কারজনক বলে মন্তব্য করে অবিলম্বে এ ধরনে ঘৃনিত ও জঘন্য সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং হামলার মদদ দাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে ক্যাব।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (চমেক) এ কিডনি ডায়ালাইসিসের মূল্যবৃদ্ধি ও এর প্রতিবাদে অংশগ্রহনকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলার ঘটনায় এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ এসব দাবি জানান।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, মৃত্যুপথ যাত্রী কিডনি রোগীদের কিডনি ডায়ালিসিস একটি অত্যন্ত মানবিক ও জীবন রক্ষাকারী মানবিক স্বাস্থ্যসেবা। কিডনি মানবদেহের জন্য একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কিডনি বিকল হলে শরীর ফোলা, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি, দুর্বলতা, রক্তশূন্যতাসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়ার পাশাপাশি দ্রুত মৃত্যু হয়। কিন্তু কিডনি রোগীরা নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতে না পারলে দ্রুত মৃত্যুবরণে বাধ্য হন। যেখানে অনেক দরিদ্র রোগীদের পক্ষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (চমেক) গিয়ে কিডনি ডায়ালিসিসের মূল্য পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। সেখানে কিডনি ডায়ালিসিসের মূল্য একলাফে ৫-৭ গুনবৃদ্ধি করা কোন সুস্থ ও শুভ বৃদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাজ হতে পারে না।

‘বর্তমান সরকার, বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন মানবিক প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বিশ্বে সমাদ্রিত হয়েছেন, সেখানে দরিদ্র কিডনি রোগীদের ডায়ালিসিস ফিস এভাবে একলাফে ৫-৭গুন বাড়ানোর মানবিক প্রধান মন্ত্রীর প্রতি অবজ্ঞার সামিল। সরকার অনেক অপ্রয়োজনীয় খাতে ভর্তুকি প্রদান করছেন, দরিদ্র কিডনি রোগীদের এই জীবন রক্ষাকারী মানবিক সেবাটি অব্যাহত রাখতে এখাতে প্রয়োজনে ভর্তুকি অব্যাহত রাখাতে বাঁধা কোথায়?’

নেতৃবৃন্দ ডায়ালাইসিসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলাকে ন্যাক্কারজনক বলে মন্তব্য করে বলেন, ‘জনগণের করের টাকায় তাদের বেতন-ভাতা হয়। আর একটি মানবিক দাবি জানাতে যদি তাদের ওপর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন চড়াও হয়, তাহলে তার চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কিছু হতে পারে না। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির যন্ত্রনায় মানুষ একদিকে নিঃস্ব হয়ে আছে। সেখানে চিকিৎসাসহ অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার ডায়ালিসিসের খরচ যোগাতে গিয়ে একেবারে ফতুর হয়ে গিয়েছে।’ তাই চট্টগ্রাম মেডেকেল কলেজ ও হাসপাতালে কিডনি ডায়ালিসিস সেবার পরিধি বৃদ্ধির জন্য সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহনের আহবান জানান। একই সাথে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনকে মানবাধিকার ও মানবিক বিষয়ের ওপর শুন্য সহনশীলতা প্রদর্শনের দাবি জানান।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এতদাঞ্চলের ৫ কোটি মানুষের উচ্চতর চিকিৎসার ক্ষেত্রে একমাত্র নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান হলেও প্রতি পদে পদে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মকর্তা, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপেশাদার আচরণ, নার্স ও চিকিৎসকগনের দায়িত্বপালনে অবহেলা, সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা নানা সময় গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হলেও প্রতিকারের দৃষ্ঠান্ত কম। ইতিপূর্বে দুদক কয়েকবার গণশুনানি করেও পরিস্থিতির উন্নয়ন করতে পারেনি। একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এধরনের আচরণ কাংখিত নয়।

নেতৃবৃন্দ কম খরচে ডায়ালিসিসের সুবিধা নিশ্চিতসহ রোগীদের প্রতি মানবিক আচরণ ও সত্যিকারের মানবিক সেবা নিশ্চিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ