৬ নভেম্বর ২০২৫

উখিয়া সীমান্তে ইয়াবা কারবারি-বিজিবি গোলাগুলি, আতঙ্ক

সায়ীদ আলমগীর, কক্সবাজার »

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী সীমান্তে ইয়াবা কারবারিদের সাথে সীমান্ত রক্ষী বিজিবি সদস্যদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। সীমান্তে ‘বিজিবিকে লক্ষ্য করে ইয়াবা কারবারিরা গুলিবর্ষণ করলে বিজিবি পাল্টা গুলি চালায়’ বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল সাইফুল ইসলাম চৌধুরী।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল হাজীর বাড়ি নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটলেও রাত সাড়ে ১১টায় তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

লে. কর্ণেল সাইফুল ইসলাম চৌধুরী লিখিত জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের (৩৪ বিজিবি) অধিনস্থ বালুখালী বিওপির দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে সীমান্ত পিলার-২০ থেকে প্রায় ৮শ গজ উত্তর-পূর্ব কোনে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ইয়াবার চালান আসছে। এমন খবর পেয়ে রহমতের বিল হাজীর বাড়ী নামক এলাকায় বালুখালী বিওপির একটি বিশেষ টহলদল অভিযান চালায়। বিজিবি টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা বিজিবি টহল দলকে লক্ষ্য করে ফায়ার শুরু করে। এ সময়ে বিজিবি টহল দল জান মাল ও সরকারী সম্পদ রক্ষার্থে কৌশলগত অবস্থান নিয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করে পাল্টা ফায়ার করে। এতে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে মিয়ানমারের দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

তিনি আরও বলন, ফায়ারের ঘটনায় বিজিবি টহলদলের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কোন সদস্য আহত কিংবা নিহত হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। ঘটনার পর হতে সকল বিওপি সদস্যরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। বাড়ানো হয়েছে টহল এবং গোয়েন্দা কার্যক্রম।

এদিকে, স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, মিয়ানমার সীমান্তে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক সম্রাট নবী হোসেন গ্রুপের সদস্যরা চোরাচালান নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে। এসময় ধামনখালি এলাকায় মিয়ানমার থেকে আসা দুইজনকে টহল দল আটক করে তল্লাশি চালালে মিয়ানমারের অভ্যন্তর হতে সশস্ত্র নবী হোসেন গ্রুপ বিজিবিকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। অনবরত শতাধিক রাউন্ড ফায়ার করে তারা। বিজিবিও আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি চালায়। ফায়ারে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও জানান, সশস্ত্র নবী হোসেন গ্রুপ মাদক ও অপহরণসহ সীমান্ত এলাকায় অপরাধের স্বর্গরাজ্য তৈরি করেছে। তিনি মুলত মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থান করেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ সীমান্ত এলাকায় নবী হোসেন গ্রুপ দীর্ঘদিন যাবত সন্ত্রাসী ও মাদকের নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে বলে বার বার প্রচার পেয়েছে।তার গ্রুপের হাতে অনেক নিরাপদ মানুষ হত্যার শিকার হয়েছে। সেই বাংলাদেশে মাদক পাচারের মুল হোতা। বিজিবি কতৃর্ক নবী হোসেনকে ধরিয়ে দিতে ১০লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষানা করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত বছরের জুলাই হতে টানা কয়েকমাস মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে সংঘাত চলে। সেসময় অনেক গোলা বাংলাদেশের মাটিতেও এসে পড়েছে। গত মাস দুয়েক ধরে সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ ছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আবার গুলির শব্দে সীমান্তে বসবাসকারি লোকজনের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ