৬ নভেম্বর ২০২৫

ছিল না নিরাপত্তা বেষ্টনী, ভবন মালিক ও ঠিকাদারের ভুলে দুই শ্রমিকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক»

চট্টগ্রাম নগরীর জামালখান এলাকায় পুরাতন ভবন ভাঙার কাজ চলাকালিন দেয়াল ধসে জসিম উদ্দিন (৪০) ও রনক চক্রবর্তী (৫৭) নামে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

এর মধ্যে জসিম উদ্দিন ছিলেন ভবনটি ভাঙার কাজের সুপারভাইজার। তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। রণ চক্রবর্তী প্রথমে গুরুত্বর আহত হন। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মারা যান।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল চারটার দিকে জামালখানের গ্রান্ড সিকদার হোটেল সংলগ্ন লুসি বিউটি পার্লার নামে ভবনটি ধসের ঘটনাটি ঘটে।

জানা যায়, ভবনটি দুইতলা পুরাতন ভবন ছিল। দুইতলা ভাঙার কাজ শেষে প্রথম তলার ছাদ ভাঙা শুরু হয়। কিন্তু কোনো প্রকার নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়াই দুইতলা ভাঙার কাজ শেষে প্রথম তলার ছাদ ভাঙা শুরু করে। বিকেল বিকেল ৪টা নাগাদ ভবন ভাঙার কাজ করার সময় হঠাৎ দেয়াল ধসে পড়ে। এতে ভবন ভাঙার কাজের সুপারভাইজার জসিম উদ্দিন ঘটনাস্থলেই মারা যান।

স্থানীয়রা জানান, ভবন মালিক ও ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে এমনটা হয়েছে।

ইলিয়াছ ইমরুল নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ধসে পড়ার পর দেয়ালের কিছু অংশ সামনের সড়কের বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীদের গায়ে পড়ে। যদিও কেউ আহত হননি। দেয়াল ভাঙার কাজে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ মহসিন। তিনি জানান, নিহত জসিম উদ্দিন নগরীর চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা এবং দুই সন্তানের জনক। তাদের গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলার লালমোহন এবং তার শ্বশুর বাড়ি ফটিকছড়ির ভূজপুর এলাকায়।

অন্যদিকে, রণ চক্রবর্তী সাতকানিয়া উপজেলার দুলাল চক্রবর্তীর ছেলে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন বলেন, ভবনের দেয়াল ধসের ঘটনায় একজনের তাৎক্ষণিক মৃত্যু হয়েছে, অন্যজন হাসপাতালে মারা গেছেন। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, সে যেই হোক, কারও ফোন-কলে কাজ হবে না। আজকের পর থেকে কোনো নির্মাণাধীন ভবনের সঠিক নিরাপত্তা বেষ্টনি ছাড়া কাজ করা যাবে না। এই ব্যাপারে কঠোর নজরদারি রাখা হবে বলে তিনি জানান।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, পুরাতন বিল্ডিং ভাঙার কাজ করছিলেন কয়েকজন শ্রমিক। হঠাৎ বিল্ডিংয়ের দেয়াল ধসে পড়ে। এতে নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে একজনের মৃত্যু হয়। আরেকজনকে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে সেখানে তিনিও মারা যান।

আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, ভবনটির পেছনের অংশ ভাঙার কাজ শেষে সামনের অংশ (রাস্তার পাশে) ভাঙার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

চমেক হাসপাতালে পুলিশের এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, ভবনের দেয়াল ধসে পড়ার ঘটনায় রনক চক্রবর্তী নামে এক যুবককে হাসপাতালে আনা হয়। পরে তিনি মারা যান।

বাংলাধারা/এআই

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ