২৮ অক্টোবর ২০২৫

কক্সবাজারে গণপরিবহনে চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের প্রধানসহ গ্রেফতার ৫

কক্সবাজার প্রতিনিধি »

কক্সবাজারে গণপরিবহন ভিত্তিক চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের প্রধানসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫’র সদস্যরা। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে কক্সবাজার সদরের ঝিলংজাস্থ লিংকরোড এলাকায় পরিবহণ হতে চাঁদাবাজিকালে তাদের হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-১৫’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন। এসময় চাঁদা আদায়ের রসিদ ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে সংগ্রহকৃত ১০ হাজার ২০০ টাকাও জব্দ করা হয়।

গ্রেফতাররা হলো— সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরীপাড়ার (৪নং ওয়ার্ড) মৃত আফতাব উদ্দিন সিকদারের ছেলে তাহের আহমেদ সিকদার (৫০), মুহুরীপাড়া বেসিক এলাকার আবু বক্করের ছেলে ওয়াবায়দুল করিম (৪০), টেকনাফের হোয়াইক্যং, বিজিবি চেক পোষ্ট এলাকার মৃত ইসলামের ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৩৫), রামুর ফতেকারকুল হাই টুপিগ্রামের নিরঞ্জন বড়ুয়ার ছেলে সুজন বড়ুয়া (৪২) ও চট্টগ্রামের চন্দনাইশের বড়মা ইউনিয়নের চরবড়মা এলাকার মৃত গোলাম কাদেরের ছেলে বর্তমানে উখিয়ার হলদিয়াপালং মৌলভীপাড়ার বাসিন্দা শাহ জাহান (৪৮)

র‌্যাব-১৫’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার জানান, আটককৃতরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কক্সবাজারে আগত যানবাহনের চালক ও শ্রমিকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক ১০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে আসছে। এছাড়াও তারা কক্সবাজারের বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টার ইনচার্জদের কাছ থেকেও মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবি ও চাঁদা না দিলে বিভিন্ন ধরণের হুমকি প্রদান করতেন। এভাবে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পাশাপাশি তারা জেলা পরিবহন খাতকে বিশৃঙ্খল করে তুলেছিলেন। তাদের অবস্থান জেলা শহরে প্রবেশমুখে হওয়ায় টাকা না দিলে হয়রানি করে লিংকরোডের পূর্বদিকে সটকে পড়তো চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা। তাদের শেল্টার দিতো চক্রটির গডফাদার হিসেবে পরিচিত তাহের আহমেদ সিকদার। তাই নিরুপায় হয়ে চালক-শ্রমিক ও কাউন্টার ইনচার্জগণ তাদের চাহিদামতো টাকা দিয়ে ফেলত। এমন অভিযোগ পেয়ে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। গতকালও পূর্বের নিয়মে টাকা আদায় কালে র‌্যাব-১৫’র একটি চৌকস টিম হাতে নাতে তাদের ধরে ফেলে। এসময় টাকা আদায়ের অবৈধ স্লিপ, নগদ ১০ হাজার ২০০ টাকাও জব্দ করা হয়।

তিনি আরো জানান, তাদের আটকের পর পূর্বে চাঁদা প্রদান করা কক্সবাজার শ্যামলী পরিবহনের মহা ব্যবস্থাপক (জিএম) খোরশেদ আলম শামীম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় তাদের সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

র‌্যাব-১৫, কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক বলেন, খোঁজ নিয়ে জেনেছি চাঁদাবাজ চক্রটির প্রধান তাহের আহমেদ সিকদার পেশায় একজন আইনজীবী। তিনি জাতীয় শ্রমিকলীগ কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। এ মামলায় গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। জহির থাকাকালীন চাঁদাবাজির চেষ্টা করায় তার সাথে দ্বন্দ্বে জড়ান। জহিরের মৃত্যুর পর জেল খেটে এসে এখন বাঁধাহীন ভাবে চাঁদাবাজি করে আসছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্যসহ নানা অপরাধে বিভিন্ন থানায় ৬টি মামলা চলমান বলে তথ্য পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, অপরাধীচক্র যতই শক্তিশালী হোক না কেন, তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে র‌্যাব দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আইনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের অভিযান চলমান থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আরও পড়ুন