৭ নভেম্বর ২০২৫

উদ্ধারকাজ ও হতাহতদের সেবায় এগিয়ে আসেন দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী

রিয়ান বিন কবির »

‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য’- শিল্পী ভূপেন হাজারি গানে গানে যে মানবতার কথা বলেছিলেন সেই মানবতার ডাকে এগিয়ে এসেছে চট্টগ্রামবাসী। সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণে হতাহত স্বজনদের আহাজারিতে যখন ভারী হয়ে ওঠে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) ইমারজেন্সি বিভাগ ঠিক তখন আর্ত-মানবতার ডাকে এগিয়ে এসেছে চট্টগ্রামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। এর আগে বিএম ডিপো বিস্ফোরণের ঘটনাও এসব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কার্যক্রমে দেখেছে দেশবাসী।

গতকাল শনিবার (৪ মার্চ) বিকেলে সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকার সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমেডেটের প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়ে ৬ জন। আহত হয়েছে আরও ২০ জন।

বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থল থেকে সাইরেন বাজিয়ে চমেকের অভিমুখে ছুটে আসে সারি-সারি অ্যাম্বুলেন্স। চিকিৎসক ও নার্সদের ছোটাছুটি এবং দিশেহারা স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে হাসপাতালের পরিবেশ। এ সময় ব্যাপক হতাহতের ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই ছুটে আসে অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসায় কেউ রক্ত, কেউ খাবার-পানি এবং কেউ কেউ চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে ছুটে এসেছেন। আবার কোন কোন সংগঠনের সদস্যদের দেখা গেছে, উৎসুক জনতার ভিড় সামলানোর কাজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করছেন।

এসব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- জেলা প্রশাসনের স্বেচ্ছাসেবক টিম, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ, সেন্ট্রাল বয়েজ অব রাউজান, বিদ্যানন্দ, রেড ক্রিসেন্ট, স্মাইল বাংলাদেশ এবং চট্টগ্রাম ব্লাড ডোনেট অ্যাসোসিয়েশন।

গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের মানবিক কর্মসূচির প্রধান সমন্বয়ক মোসাহেব উদ্দিন বখতিয়ার বাংলাধারাকে বলেন, ঘটনার পর খবর পাওয়া মাত্রই আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এখন পর্যন্ত আমাদের সংগঠনের ৩টি নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্স এবং শতাধিক কর্মী কাজ করছেন।আমাদের অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে ৪ মৃতদেহ ও ১৫ জনের মতো আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের চিকিৎসার জন্য সবধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম ব্লাড ডোনেট অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ রিপন জানান, আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্লাড ডোনার সংগ্রহ করা আছে।আহত রোগীদের যখনই প্রয়োজন হবে আমরা ব্লাড দিতে সর্বদা প্রস্তুত আছি।

জেলা প্রশাসনের ‘সহায়তা কেন্দ্র ও কন্ট্রোল রুম’-এ ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার বিষয়ে জানতে চাইলে এনডিসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে আসা রোগীদের চিকিৎসায় জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও নগদ ৭ হাজার টাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ২৫ হাজার, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে ২৫ হাজার টাকা এবং শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে দুই লাখ টাকা সহায়তা দেওয়া হবে।

এছাড়া এই সংকট মোকাবেলায় ডাক্তার, নার্স, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, র‍্যাব থেকে শুরু করে গণমাধ্যমকর্মীরা নিরলস পরিশ্রম ও সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

বাংলাধারা/এআই

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ