নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জে জাল দলিল তৈরি করে জমি আত্মসাৎ করার চেষ্টার অভিযোগে ফজলুল হক প্রকাশ হক সাহেব নামের এক জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়েরের আবেদন করেছিলেন জমির মালিক মাকসুদ আহমেদ। পরে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে আদেশ দেন। ডিবির তদন্তে জাল দলিল বানিয়ে জায়গা আত্মসাতের বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেলে আসামি ফজলুল হক নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
জানা গেছে, জোরারগঞ্জের রুস্তম আলী দীর্ঘ ৩৫ বছর প্রবাস জীবন শেষে শেষ সম্বল হিসেবে ১ শতক জায়গা তার ৫ ছেলে-মেয়ের জন্য ক্রয় করেছিলেন। খুব একটা আর্থিক স্বচ্ছলতা ও ক্ষমতার প্রভাব না থাকায় কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তার জন্য। দলিল অনুযায়ী জমির মালিক তিনি হলেও দখল করে নেয় একই এলাকার ভূমি দস্যু ফজলুল হক। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসন যে কারও তোয়াক্কা করে না সে। নিজেদের কেনা জায়গায় গেলেই বারবার হেনস্তার শিকার হন রুস্তম আলী ও তার পরিবার। আর এসব কাজে ফজলুল হকের প্রধান সহযোগি তার এক ভাগিনা।
আরও জানা গেছে, শুধু রুস্তম আলী বা তার পরিবার নয়, জাল দলিল বানিয়ে জোরারগঞ্জ স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম ও তার ভাই মাকছুদের জায়গাও দখলের চেষ্টা করে সে। এই বিষয়েও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বারবার সুরাহার চেষ্টা করলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এড়িয়ে যায় ফজলুল।
সম্প্রতি জাল দলিল বানিয়ে জায়গা আত্মসাতের মামলায় জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এই ভূমি দস্যুকে।
ভূমি দস্যু ফজলুল হকের এসব কর্মকাণ্ডে হয়রানির শিকার হয় আরও ৫ পরিবার। জাল দলিল বানিয়ে কিংবা দখল করে অন্যের জমি নিজের নামে করাটা যেন পেশা হয়ে দাড়িঁয়েছে তার।
দলিল যার জায়গা তার। দলিল থাকলেও ভূমি দস্যু ফজলুল হকের কারণে নিজের ক্রয়কৃত জায়গা ব্যাবহার করতে পারছেন না ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। বিষয়টির অতি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে এবং এই ভূমি দস্যুর দ্রুত বিচার চান ভুক্তভোগী পরিবারগুলো ।
এই ব্যাপারে বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু জানান, ফজলুল হকের বিরুদ্ধে মাকসুদ আহমেদ বাদি হয়ে ৪৬৭ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি গ্রহণ করেন এবং এর সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে এই মামলার তদন্ত ভার প্রদান করেন।পুলিশের তদন্তে মামলার সত্যতা পাওয়া গেলে আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন।
তিনি আরও জানান, আসামি বিগত ১ মাস যাবত জেল হাজতে আছে আসামি ফজলুল হক। কিন্তু এখনো সাজা হয়নি। ৪৬৭ ধারায় মামলার সর্বোচ্চ সাজা জাবজ্জীবন এবং সর্বনিম্ন ১০ বছর। এছাড়াও আসামির নামে ৩০৭ ধারায় মারধর ও হত্যা চেষ্টার আরও একটি মামলা আছে।
বাংলাধারা/এআই