কক্সবাজার প্রতিনিধি »
কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর খোরশেদ আলম হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রধান আসামি তারেককে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ভোররাত ২টার দিকে ঘটিকায় জেলার চকরিয়া থানার হারবাং এলাকা হতে তাকে আটক করে র্যাবের একটি আভিযানিক দল।
গ্রেফতার মুহাম্মদ তারেক (২৪) কুতুবদিয়া উপজেলাধীন মিজ্জিরপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কুতুবদিয়ার উত্তর ধুরুং মিজ্জিপাড়া খোরশেদ আলম ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। একই এলাকার বাসিন্দা তারেক দীর্ঘদিন ধরে খোরশেদের দোকান থেকে বাকীতে চা-নাস্তা করাসহ ছোটখাটো পণ্যসামগ্রী ক্রয় ও বকেয়া করে আসছিল। গত ১৮ মার্চ খোরশেদ আলম নকেয়া ৪৫০ টাকা খুঁজেন তারেকের কাছ থেকে। এ নিয়ে তাদের মাঝে মনোমালিন্য ও ঝগড়া সৃষ্টি হয়, যার জের ধরে খোরশেদকে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে তারেক। ঘটনার পরপর স্থানীয় লোকজন আহত খোরশেদকে রক্তাক্ত ও মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে কুতুবদিয়া সরকারী হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় পরবর্তীতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় এবং সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় ঘটনার ১১দিন পর গত ৩১ মার্চ খোরশে মৃত্যুবরণ করেন।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসলে দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় নিহত খোরশেদ আলমের পিতা আব্দুর রহমান বাদী হয়ে গত ২২ মার্চ গ্রেফতারকৃত তারেককে প্রধান আসামি করে ও তার অপর ৫ জন আসামীর নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো ৭ জনকে বিবাদী করে কুতুবদিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে (নং-৮,/২০২৩)।
র্যাব সূত্র জানায়, দোকান বকেয়া বাবদ তারেকের কাছে খোরশেদের পাওনা ৪৫০ টাকা পরিশোধ নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয়। এর জেরে অন্য সহযোগীদের নিয়ে খোরশেদকে খুন করার পরিকল্পনা করেন তারেক। সেই মোতাবেক গত ২০ মার্চ রাত ৯ টার দিকে কুতুবদিয়ার উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের মিজ্জির পাড়া এলাকার বেড়ি বাঁধের পাশে ঝাউবাগানে খোরশেদকে ডেকে নেয়ার পর ধারালো কিরিচ, লোহার রড, দেশীয় ধারালো অস্ত্রের উপর্যুপরি আঘাতে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তারা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে আটককৃত তারেক।
র্যাব সূত্র আরো জানায়, ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত তারেক এলাকা ছেড়ে চকরিয়া উপজেলার হারবাং এলাকাস্থ তার মামার বাড়িতে আশ্রয় নেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিতে মোবাইল ফোন ব্যবহারও বন্ধ করে দেন। কিন্তু র্যাব গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে তার অবস্থান শনাক্ত করে মঙ্গলবার ভোররাতে অভিযান চালায়। এসময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টাকালে আসামি তারেক র্যাব কর্তৃক ধৃত হন।
র্যাব-১৫ কক্সবাজার ক্যাম্পের অধিনায়ক মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যান্যদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে র্যাব। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কক্সবাজারের কুতুবদিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।













