কক্সবাজার প্রতিনিধি »
মিয়ানমার সীমান্ত অতিক্রম করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মজুদের আশায় আনা ২১ কেজি আইস মাদক জব্দ করেছে বিজিবি। এ সময় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ৩৪ বিজিবি’র চিত্তবিনোদন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ৩৪ বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মেহেদী হোসাইন কবির। আইস জব্দের ইতিহাসে এটা দেশের এযাবতকালের সবচেয়ে বড় চালান বলে দাবি করেছেন কর্নেল মেহেদী।
অপরদিকে, পৃথক অভিযানে টেকনাফে মালিকবিহীন ৪ লাখ ইয়াবা জব্দ করেছে বিজিবি সদস্যরা।
উখিয়ায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উখিয়ার পালংখালীর বালুখালির মৃত সিদ্দিক আহমদের ছেলে বজরুক মিয়া (২৮) একই এলাকার আব্দুল শুকুরের ছেলে মোহাম্মদ ইসমাইল (২৩) ও উখিয়ার পানখালি আবুল মন্ডলের ছেলে ছৈসুদুল বাশার (৪০)।
৩৪ বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মেহেদী হোসাইন কবির বলেন, বুধবার ভোরে গোপন সংবাদে খবর আসে মিয়ানমার থেকে ক্রিস্টাল মেথ (আইস)’র চালান আসছে। এ খবরে বালুখালী বিওপি’র সদস্যরা কৌশলে অবস্থান নিয়ে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। এক পর্যায়ে খবর আসে চালান এনে পালংখালী রহমতের বিল এলাকায় পাচারের উদ্দেশ্যে মজুদ রাখা হয়েছে। খবর পেয়ে একটি আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ২১ কেজি ওজনের ২০ প্যাকেট আইস উদ্ধার করা হয়। এসময় ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাদক,চোরাচালান রোধে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সাথে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। বৈঠকে কাঁটাতারের বেড়া সংস্কারসহ সব বিষয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে।

বারবার মাদকের চালান জব্দ, চোরাইগরুসহ নানা চোরাইপণ্য সীমান্ত অতিক্রম করে আসায় সীমান্ত অরক্ষিত বলে অভিযোগ উঠেছে এমন প্রশ্নের জবাবে, তিনি বলেন- ঢালাও ভাবে সীমান্ত অরক্ষিত বলা সমীচীন হবে না।ইতোমধ্যে ২ হাজারের অধিক গরু জব্দ করা হয়েছে। এর আগে ৯ কেজি এবং আজ (বুধবার) ২১ কেজি জব্দ করা সম্ভব হয়েছে। আমরা আমাদের মতো প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।
আইসের বিশাল চালানটি কোথায় যাচ্ছিল এবং পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, আইসগুলো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মজুদের জন্য আনা হয়েছিল। মজুদ করা গেলে সেখান হতে খন্ড খন্ড ভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। গ্রেফতারকৃতদের সাথে কারা কারা জড়িত তাদের বিষয়ে তথ্য এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে তা এখন বলা যাচ্ছে না। সবাইকে আইনের আওতায় আনার উদ্যোগ চলছে।
এদিকে, গ্রেফতারকৃতদের মাঝে বজরুককে উখিয়ার বালুখালী এলাকার মাদক সম্রাট ও গডফাদার বলে উল্লেখ করা হলেও মাদকসহ ছবি তোলার সময় বজরুক ও তার দুই সহযোগী বলে উল্লেখ করা তিনজনই সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, এসব আইস তাদের নয়। বাসাবাড়ি হতেই তাদের ধরে এনে এ আইসের সাথে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে মিথ্যে অভিযোগ আনা হচ্ছে। স্থানীয় হিসেবে তাদের রোহিঙ্গাদের সাথে কোন সম্পর্ক নেই এবং বজরুক স্থানীয় বাজার ইজারা নিয়ে ব্যবসা করছেন বলে দাবি করেন। এসব কথা বলায় তাদেরকে দ্রুত সংবাদ সম্মেলনস্থল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে, বিজিবি কর্মকর্তা কর্ণেল মেহেদীও তার বক্তব্যে বজরুক তিন কোটও টাকায় বালুখালীর বাজার ডাকের কথা উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে, টেকনাফ ২বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে টেকনাফ ২ বিজিবির নাজিরপাড়া বিওপির বিজিবির টহলদল নাফনদীর সংলগ্ন কেওড়া বাগানের ভেতর থেকে মালিকবিহীন ৪লাখ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করে। এসময় মাদক পাচার কাজে ব্যবহৃত একটি কাঠের নৌকা জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মালিকবিহীন ৪লাখ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ব্যাটালিয়ন সদরের জমা রাখা হয়েছে। পরবর্তী তা ধ্বংস করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।













