৬ নভেম্বর ২০২৫

কর্ণফুলীতে গরুর খামারের বর্জ্যে বন্ধ পানি চলাচলের ড্রেন, চরম ভোগান্তিতে ৭০০ পরিবার

কর্ণফুলী প্রতিনিধি »

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের জামালপাড়ায় গরুর খামারের বর্জ্যে পানি ও বায়ু দূষণের শিকার হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন আশপাশের কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৭০০ পরিবার। বর্জ্য পুকুরে পানিতে মিশে দূষণের ফলে বিভিন্ন জীবাণুর সৃষ্টি হয়েছে। এতে এলাকাবাসীর গোসল, রান্নাবান্না আর নামাজের অজুতেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অতিষ্ঠ স্থানীয়রা জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করার পরও কোনো সাড়া দেননি খামারের মালিক মো. শফিক।

উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের হাজ্বী আনু মিয়া বাড়ি এলাকায় এই গরুর খামারে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, মালিক শফিক বর্জ্য নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না করে খামারের পাশে পানি চলাচলের ড্রেনে দূষিত বর্জ্য ফেলেন। ফলে তা সরাসরি কয়েকটি গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি এবং মসজিদের পুকুরের গিয়ে পড়ছে।

ভুক্তভোগীদের পক্ষে মো. মহসিন বলেন, শফিকের খামারে প্রায় ৩০/৪০টি গরু আছে। এসব গরুর বর্জ্য নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না করে তিনি পাশের ড্রেনে খামারের বর্জ্য নিষ্কাশনের বিকল্প উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছে। যার কারণে ড্রেনটি ভরাট হয়ে যায়। এতে ড্রেনের স্বাভাবিক পানি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সেই সব দূষিত পানি আশপাশে থাকা বিভিন্ন পুকুরের গিয়ে পড়ছে। এর ফলে পুকুরগুলোর উপর নির্ভরশীল প্রায় ৭০০ পরিবার চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। তাদের গোসল, রান্নাবান্নার পানি এমনকি নামাজের অজুর পানির সংকুলানে বেগ পেতে হচ্ছে আমাদের।

৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ড্রেনটি ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৫ নম্বর পর্যন্ত বিস্তৃত, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০০ ফুট। গত ৮/৯ মাস আগে থেকে খামারের বর্জ্যের কারণে এই ড্রেনের পানি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সেসময় আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ড্রেনটি পরিষ্কার করে আবার পানি চলাচলের উপযোগী করে তুলি। কিন্তু বছর না পেরুতেই ড্রেনটি পানি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে আমিসহ স্থানীয়রা গত এক বছর ধরে ওই খামারের মালিক মো. শফিককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হলেও তিনি কোনো ধরনের কর্ণপাত করেননি। আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসন এবং সরকারের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে খামারের মালিক মো. শফিকের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ভুক্তভোগীদের অভিযোগ স্বীকার করেন এবং সমস্যা সমাধানে তার উদ্যোগের কথা জানতে চাইলে ফোন কেটে দেন।

৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. কাইছার জানান, খামারের মালিক মো. শফিককে এ বিষয়ে আমি কয়েকবার সতর্ক করেছি। সে আমাকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাসও কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মামুনুর রশীদ জানান, এ বিষয়ে এখনও কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ