৩১ অক্টোবর ২০২৫

দেওয়ান পাড়ায় শতবছরের ঐতিহ্য

কোরবানি না দিলেও ঘরে ঘরে পৌছে যায় মাংস

ঈদের আনন্দ যেন সবাই উপভোগ করতে পারে সে লক্ষ্যে সমাজের কোরবানির পশুর মাংস এক জায়গায় জড়ো করে গ্রামের যারা কোরবানি দেয়নি তাদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়া হয় মাংস।

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের দেওয়ান পাড়া সমাজের শতবছরের ঐতিহ্য এটি। কোরবানিদাতারা গ্রামের একটি জায়গায় জড়ো করেন। এরপর সে মাংস সমান ভাগ করে গ্রামের কোরবানি না দেওয়া পরিবারকে দেওয়া হয়।

মাংসের জন্য কাউতে ঘুরতে হয় না কারও দ্বারে দ্বারে। সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতির এই মেলবন্ধন চলছে যুগ যুগ ধরে। শতবছর ধরে এই গ্রামের বাসিন্দা, যারা কোরবানি দেন, তারা মাংসের তিনভাগের একভাগ এখানে দিয়ে যান।

ঈদের দিন দুপুরে মাংসের ব্যবস্থাপনায় থাকা মাস্টার নাছির আহমদ বলেন, এ সমাজে ১৬৫ পরিবার রয়েছে। তার মধ্যে ৩৩ টি পরিবার পশু কোরবানি দিয়েছে। ঈদের দিন সকালে তারা তাদের জবাইকৃত পশুর এক-তৃতীয়াংশ মসজিদের মাঠে দিয়ে যায়।

স্থানীয় মুরুব্বিদের উপস্থিতিতে তালিকা করে মাংস জমা হওয়ার পর নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে তা কেটে ভাগ করে দিয়েছি। প্রায় ৫ কেজি করে পড়েছে প্রতিটি পরিবারে। এমন সামাজিক সম্প্রীতির অনন্য মেলবন্ধন পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা গভীর করে বলে তিনি জানান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ওসমান গনি বলেন, বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই আমরা দেখছি মসজিদের মাঠে মাংস নিয়ে আসেন কোরবানি দাতারা৷ এরপর ব্যবস্থাপনা কমিটি সেই মাংস প্যাকেটজাত করে বণ্টন করেন। তালিকায় থাকা কেউ মাংস না নিলে তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। যুগের পর যুগ ধরে এ রীতি চলে আসছে আমাদের গ্রামে।

বড়হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিজয় কুমার বড়ুয়া বলেন, দেওয়ান পাড়ায় শতবছর ধরে এভাবে কোরবানির মাংস বণ্টন হয়ে আসছে। এটি একটি ভালো উদ্যোগ। এতে ধনী-গরিব সবাই ঈদ আনন্দ ভাগ করে নিতে পারছেন। এ প্রথাটি এক প্রজন্মের হাত ধরে অন্য প্রজন্মেও টিকে থাকুক এটিই এখন প্রত্যাশা।

আরও পড়ুন