চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা এনামুল হক। বয়স ৩৫। চালাতেন বাড়ির পাশে একটি মুদির দোকান। ব্যবসা থেকে কাঙ্খিত উপার্জন না আসায় ব্যবসায়ী এনামুল হয়ে উঠলেন একজন পুরাদস্তুর উদ্যোক্তা। ৭ কানি জমি বর্গা নিয়ে শুরু করেন সবজি চাষ। সাথী ফসল হিসেবে কৃষি অফিসের পরামর্শে লাগান পেঁপের চারা। এখন তার পেঁপে বাগানের ১৭শ গাছে শোভা পাচ্ছে কাঁচা-পাকা পেঁপে। চলত মৌসুমে ২৫ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রির আশা করছেন এনামুল।
এনামুল হক বলেন, ‘চলতি বছরের মার্চ মাসে কৃষি অফিস ৪০০ চারা ও সার প্রদান করেন। বাকি ১৩০০ চারা কিনে লাগিয়েছি। এতে ব্যয় হয় প্রায় ৮ লাখ টাকা। প্রথম দিকে ৮ জন কর্মচারী রেখেছিলাম। এখন ৪জন কর্মচারী বাগান দেখাশোনা করছেন। বাগানে এসে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রায় প্রতিদিনই কাঁচা পেঁপে নিয়ে যান। পাইকারীতে এসব পেঁপে বিক্রি হয় ৪০ টাকা কেজি দরে।
এনামুল আরও বলেন, ‘অনেকেই আমাদের বাগানে আসছেন এবং পেঁপের চাষে আগ্রহ প্রকাশ করে বিভিন্ন পরামর্শ নিচ্ছেন। পেঁপে চাষে কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্নভাবে পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন।’
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৌমিত্র দে বলেন, ‘এনামুলের বাগানে তিন জাতের পেঁপে গাছ রয়েছে- রেড লেডি, গ্রীণ লেডি ও দেশিয় শাহী জাতের পেঁপে। এইসব গাছ প্রায় ২ বছর একটানা ফলন দিতে পারে। এর পরবর্তী সময়েও ফলন দেবে। তবে সেটা হবে তুলনামূলক কম। পেঁপে গাছে সাধারণত মোজাইক ভাইরাস, মিলিবাগের আক্রমণ বেশি হয়। সেইজন্য সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হয় এনামুলের বাগানটি। গত সপ্তাহ থেকে পেঁপে সংগ্রহ ও বিক্রি করতে শুরু করেছেন এনামুল। ইতোমধ্যে ২০ মণ পেঁপে বিক্রি করে ফেলেছেন তিনি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.আতিক উল্লাহ বলেন, এনামুলের আগ্রহ দেখে স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচারিষ্ট কন্টিটিভনেস প্রজেক্ট (এস এ সি পি) এর আওতায় চলতি বছর তাকে প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। পেঁপে চাষের জন্য বোয়ালখালী উপজেলার আবহাওয়া ও মাটি বেশ উপযোগী। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক গাছ থেকে দেড় থেকে দুই বছরে গড়ে ১০০-১৫০ কেজি পেঁপে সংগ্রহ করা যাবে। ‘বর্তমানে এই উপজেলায় বেশ কয়েকটি বড় পেঁপে বাগান গড়ে উঠেছে। পেঁপের তেমন কোন রোগবালাই নেই। বাজারে কাঁচা ও পাকা পেঁপের ভালো চাহিদা রয়েছে। নিয়মিত পরিচর্যা ও রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা নিলে লাভবান হওয়া যায়। আমরা পেঁপে চাষিদের নানাভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।
				












