আগামী ৬ অক্টোবর চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আওয়ামী লীগের সমাবেশেকে ঘিরে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গিয়াস উদ্দিন। প্রস্তুতি সভায় হঠাৎ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে নারীসহ ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এ হামলার জন্য স্থানীয় চেরাম্যানের অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমি একটি সমাবেশের আয়োজন করেছিলাম। সেখানে কোনো কথাবার্তা ছাড়াই ৯ নম্বর সদর মিরসরাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুল আলম দিদার ও উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মাসুদ করিম রানার নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। এতে নারীসহ অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহত অনেককেই স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এ প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মিরসরাই সদর ইউনিয়নের সুফিয়া রোডস্থ নুরজাহান কমিউনিটি সেন্টারে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
হামলায় আহতরা হলেন— আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আনোয়ার সবুজ (৫৫), সাবেক কমিশনার রহিমুল্লাহ (৫২), মহিলা আওয়ামী লীগ কর্মী ববি, যুবলীগকর্মী সাইফুল (৪৫), কামরুল ইসলাম (৩৩), সরোয়ার (৩৫), মো. পলাশ (৩০), সেলিম (৪৫), ছাত্রলীগ কর্মী হৃদয় (২৫), রনী (২৮), হাসান (২৬), আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গুরুতর আহত কামরুল ইসলাম, মো. পলাশ, মো. সবুজ, হৃদয়, হাসান ও ববিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মাসুদ করিম রানা এবং ইউপি চেয়ারম্যান দিদারের নেতৃত্বে আমার শান্তিপূর্ণ সমাবেশে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী। এ ঘটনায় আমার অনেব নেতাকর্মী মারাত্মক আহত হয়েছেন।’

‘আমি ওয়ান এলেভেনের সময় দিনরাত দলের জন্য খেটেছি, রাজপথে সংগ্রাম করেছি। বিএনপি নেতাকর্মীদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছি। অথচ আজ আমিই আওয়ামী লীগের সমাবেশ করতে বাধা পাচ্ছি। যা কখনো আশা করি না। মূলত আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষন্বিত হয়ে তারা এ হামলা করেছে।’— বলেন গিয়াস উদ্দিন।
তিনি আরও জানান, মাসুদ করিম রানা এবং শামসুল আলম দিদারের নেতৃত্বে হামলার সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন- ১২ নং খৈয়াছড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদুল হাসান, ৯ নং সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সলিম মেম্বার, ছাত্রলীগ নেতা হুমায়ুন কবির, ইউনুস, রাসেল ও আজাদ রুবেল।

এ বিষয়ে মিরসরাই সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল আলম দিদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখানে রাজনীতি করতে হলে সাংগঠনিক উপজেলা ও ইউনিয়নের কমিটির মাধ্যমে করতে হবে। আগামী ৬ অক্টোবর মিরসরাইতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সমাবেশের কর্মসূচি রয়েছে।’
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মাসুদ করিম বলেন, ‘তারা প্রথমে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। এরপর আমরা পাল্টা হামলা করেছি। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।’

মিরসরাই থানার ওসি কবির হোসেন জানান, একটি রাজনৈতিক সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। তবে এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি।













