২৯ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী

বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে ঢেউ খেলছে হলুদ ফুল

আবাদ হয়েছে তিনগুন

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে এবার সরিষার দ্বিগুণ আবাদ হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে হলুদ সরিষা ফুলের ঢেউ দেখে কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে খুশির ঝিলিক।

সরেজমিনে উপজেলার পশ্চিম গোমদন্ডী, সারোয়াতলি, করলডেঙ্গা, আমুচিয়া, শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে,শীতের সোনাঝরা রোদে যেদিকে চোখ যায় সেদিকে ঝিকিমিকি করছে সরিষার সবুজ গাছের হলুদ ফুলগুলো। আর এ হলুদ সরিষা ফুলের মাঝে রঙিন স্বপ্ন দেখছে কৃষকরা। ফলনও হয়েছে আশানুরূপ। কম খরচে লাভজনক হওয়ায় সরিষা চাষের দিকেই ঝুঁকছেন বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরিষা চাষে এই উপজেলায় ২০২২ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ হেক্টর। ২০২৩ সালে নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪৯ হেক্টর জমি। চাষ হয়েছে ১৪০ হেক্টর জমিতে।‌ বারি-১৪,১৫,১৬,১৭ ও বীণা-৯ জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। অসময়ে বৃষ্টি হওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমন কাটার বিলম্বের কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। যতটুকু চাষ হয়েছে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার সরিষার বাম্পার ফলনের আশা স্থানীয় কৃষি বিভাগের।

জৈষ্টপুরা গ্রামের কৃষক মো. আমিনুল হক বলেন, দেশে ভোজ্যতেলের দাম দিন দিন বেড়েই চলেছে। তেলের চাহিদা মেটাতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতায় ১৫ শতক জমিতে সরিষা চাষ করেছি। আগামীতে আরো বাড়াবেন বলেন তিনি।

এক প্লটে ৩ কানি জমিতে এবার সরিষার চাষ করেছেন আহল্লা করলডেঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক মো. দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, অল্প খরচ ও স্বল্প সময়ে সরিষা ঘরে তোলা যায়। ঝড় বৃষ্টি না হওয়ায় চলতি মৌসুমে সরিষার ফলনও হয়েছে বেশ। নিয়মিত পরিচর্যা করলে সরিষা চাষে দ্বিগুণ লাভ করা যায়। এবার ৭ কানি জমিতে সরিষার চাষ করেছেন।

আমুচিয়া ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল জলিল। তিনি বলেন, জমি তৈরি থেকে ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত তার খরচ হবে ২০ হাজার টাকা। আবহাওয়া ভালো থাকলে তিনি কানিতে ৩ মণ সরিষা পাবেন বলে আশা করছেন। প্রতি মণ সরিষা ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করলে খরচ বাদে লাভ হবে ৬৪ হাজার টাকা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আতিক উল্লাহ বলেন, এবছর রবি প্রণোদনার আওতায় ২০০ জন কৃষককে বীজ সার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলা পরিষদের আর্থিক সহায়তায় ১৫০ জনকে বীজ সার দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে প্রদর্শনি দেওয়া হয়েছে ২৫ জন কৃষককে।

তিনি আরও বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর সরিষার ভাল ফলন হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে উপজেলায় সরিষা আবাদের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। শুধু তাই নয় সরিষা চাষের জমিগুলোয় ঊর্বরতা বেশি থাকায় কৃষকরা এবার বোরো চাষেও এর ভালো সুফল পাবে। আমাদের ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে দেশে উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। সরিষা আবাদ বাড়াতে প্রণোদনা কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। কৃষক যেন ভালো ফলন পায় সে লক্ষে কৃষি বিভাগের টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করছি বাম্পার ফলন হবে।

আরও পড়ুন