৮ ডিসেম্বর ২০২৫

খাগড়াছড়িতে নির্বিচারে চলছে পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলন

বাংলাধারা প্রতিবেদক» খাগড়াছড়ি জেলার ৯ টি উপজেলায় চলছে নির্বিচারে পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলন। প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান পরিচালনা সত্ত্বেও কোনো ভাবেই থামছে না এসব অবৈধ কর্মকান্ড।

এদিকে মানিকছড়ি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রাতের আঁধারে নির্বিচারে পাহাড় কেটে মাটি পাচার ও ফসলি জমি থেকে বালু তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের মদদে গড়ে উঠেছে মাটি ও বালু পাচারের একাধিক চক্র। মানিকছড়ি উপজেলা প্রশাসন অবৈধভাবে পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলন বন্ধ করতে না পারায় ধ্বংস হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার সড়কগুলোতে দিন-রাতে অতিরিক্ত বালু ও মাটিভর্তি ট্রাক এবং ট্রলি চলাচল করে। এতে উপজেলার বেশির ভাগ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। সরেজমিনে দেখা যায়, মানিকছড়ি উপজেলার মুসলিমপাড়া এলাকায় বড় একটি পাহাড় কেটে সামনের জমি ভরাট করছেন আবদুল হাই নামের এক ব্যক্তি। এছাড়া উপজেলার ডাইনছড়ি, তুলাবিল, বড়বিল, তিনটহরী, সাপমারা, যোগ্যাছোলা এলাকার বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে পাহাড় কাটতে ও ফসলি জমি থেকে শ্যালো মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করতে দেখা গেছে। আর এসব বালু ট্রাক যোগে ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন মানিকছড়ি উপজেলা থেকে অর্ধশতাধিক বালুভর্তি ট্রাক চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। প্রতি গাড়ি বালু ৩ হাজার টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা ও প্রতি গাড়ি মাটি ৭০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে উপজেলার বড়বিল, তুলাবিল, ছুদুরখীল, ঘোরখানা, তিনটহরী ও যোগ্যাছোলা এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি সরাসরি জড়িত বলে জানা গেছে।

পার্বত্য জনপদে নির্বিচারে পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলনের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা সরাসরি জড়িত থাকায় ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে চান না। মানিকছড়ি উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্যমতে, অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলন করার অপরাধে বিগত পাঁচ মাসে ১৭টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ১০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও ১ জনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সৈয়দা সাদিয়া নুরীয়া বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনগণের সচেতনতা ছাড়া প্রশাসনের একার পক্ষে পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি এ সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়া মাত্র মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন