২৭ অক্টোবর ২০২৫

টিকেট কেটেও জীবিত বাড়ি ফেরা হলো না কাস্টমস কর্মকর্তার

টিকেট

গাড়ির টিকেট কেটেও জীবিত বাড়ি ফেরা হলো না কাস্টমস কর্মকর্তা কক্সবাজারের মুক্তিযোদ্ধার সন্তান শাহ জালাল উদ্দিনের। রাজধানীর বেইলি রোডের ‘গ্রিন কোজি কটেজ’ ভবনে লাগা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রাণ গেছে তার। শুক্রবার রাতে তাদের মরদেহ সনাক্ত করেছেন নিহত জালালের শশুর- এমনটি নিশ্চিত করেছেন নিহত শাহ জালালের চাচাত ভাই সাংবাদিক এএইচ সেলিম উল্লাহ।

নিহত কাস্টমস কর্মকর্তা শাহ জালাল উদ্দিন (৩৫) কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমের মেঝ ছেলে। তার স্ত্রী মেহেরুন নেসা হেলালী মিনা (২৪) এবং তাদের মেয়ে ফাহিরুজ কাশেম জামিলা (৪)। ৫ ভাই, এক বোনের মধ্যে শাহজালাল দ্বিতীয়। বাবা-মাও বেঁচে আছেন।

শাহজালাল ৩৫ তম বিসিএস (নন ক্যডার) সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (ব্যাচ১৭)হিসাবে কাস্টম এক্সইজ ও ভ্যাট -এ নারায়ণগঞ্জ অফিসে কর্মরত ছিলেন।

নিহত শাহ জালালের বড় ভাই হলদিয়া পালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সাজুর বরাত দিয়ে এএইচ সেলিম উল্লাহ জানান, ছোট ভাই শাহ জালাল উদ্দিন নারায়ণগঞ্জ কাস্টমস অফিসের রেভিনিউ কালেকটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে তারা বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে ডিনার করতে যান। এসময় অগ্নিকাণ্ডে স্ত্রী ও সন্তানসহ তার ভাইয়ের মৃত্যু হয়।

নিহত জালালের শ্বশুর মোক্তার হোসেন হেলালী গণমাধ্যমে বলেন, আমার মেয়ের জামাই দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পোর্টে কাস্টম ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দুদিনের ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়ি কক্সবাজার যাওয়ার জন্য ঢাকায় আসে এবং গ্রিন লাইন বাসের টিকিটও কাটে। ঢাকায় আসার পর পুরো ফ্যামিলি নিয়ে কাচ্চি বাড়ি রেস্টুরেন্টে খেতে যায়। এরপর তারা আর জীবিত ফিরে আসেনি। ধারনা করা হচ্ছে অতিরিক্ত ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে রাখা মরদেহ মেহেরুনের বাবা ইঞ্জিনিয়ার মোক্তার হোসেন হেলালী মেয়ে, জামাতা ও নাতনির পোশাক দেখে তাদের শনাক্ত করেন তিনি।

হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, পৃথিবীতে আসার সিরিয়াল আছে কিন্তু যাবার সিরিয়াল নেই- তা আবারও প্রমাণ করলেন এলাকার কৃতি সন্তান শাহ জালাল। তার মা-বাবা ও বড় ভাই এখনো দুনিয়ায়, কিন্তু অনাকাঙ্খিত ভাবে স্ত্রী, সন্তানসহ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেন শাহ জালাল। এর চেয়ে বড় কষ্ট আর নেই। মরদেহগুলো নিয়ে আসতে শুক্রবার রাতেই ঢাকার পথে রওয়ানা দিয়েছেন শাহ জালালের ভাই ও স্বজনরা। তাদের এ মৃত্যু এলাকায় শোকের ছায়া নামিয়েছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে ওই ভবনটিতে ভয়াবহ আগুন লাগে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে সাততলা ভবনের সব ফ্লোরে। শুক্রবার রাত পর্যন্ত ৪০ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন