পশুর হাট থেকে গরু কিনে বাড়ি যাচ্ছে রাফি ও রাব্বি। পথে পথে তাদেরকে অনেকেই ডেকে জিজ্ঞেস করছেন ‘অ-ভাই গরু হত অইয়ে (এই যে ভাই, গরুর দাম কত হয়েছে?)’ সুপরিচিত এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় কোরবানির ঈদ আসলেই, ‘ভাই, গরুর দাম কতো হয়েছে বা কতো নিল?’
শুক্রবার (১৪ জুন) বিকেলে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর বুড়া মসজিদের নুরুল্লাহ মুন্সির হাট থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে কোরবানির জন্য ষাঁড় গরু কিনেছেন তারা। রাফির সঙ্গে গরুর দড়ি ধরে আছেন রাব্বি ইসলামসহ আরও কয়েকজন। তাদের বাড়ি নগরীর চান্দগাঁও এলাকায়।
রাফি বাংলাধারাকে বলেন, ‘গরু তো নিলাম ভাই, দাম বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে গেলাম। হাটে গরু কেনা থেকে শুরু হয়েছে দাম জিজ্ঞাসা। যারা দেখছে, তারাই জিজ্ঞাসা করছে- অ ভাই দাম কত অই-য়ে বা কত হলো। মানুষ দাম জিজ্ঞাসা করায় মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগছে, আবার আনন্দও লাগছে। আসলে এমন দাম জিজ্ঞাসা শুধুমাত্র কোরবানির পশু কেনার ক্ষেত্রেই হয়।’
রাব্বি বলেন, বছরে একটা দিনই তো কোরবানি হয়। কোরবানির গরু কিনতে আসা থেকে শুরু করে সব কিছুতেই আলাদা একটা ভালোলাগা কাজ করে সবার মধ্যে। গরু কেনা, তারপর দড়ি ধরে সেই গরু হেঁটে হেঁটে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া। এই ব্যপারটাই অন্য রকম। আসলে উৎসব এমনই হওয়া উচিত।
তার কাছে গরুর হাটের সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয়টি দর কষাকষি। হাটে অনেক গরু দেখে একটা গরু কেনা হয়। সেই গরু কেনার সময় ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ভালো লাগে। গরুর হাটে ঢোকার আগে গামছা কিনে গলায় ঝুলানো এক অন্য রকম মজা।
তাদের সঙ্গে থাকা মুরুব্বি মো. সফর আলি বর্তমান গরুর বাজার নিয়ে বলেন, একটা সময় গেছে ১০ হাজার টাকায় বড় গরু পাওয়া যেত। ভাগিরা মিলে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা করে তুলে গরু কিনেছি। আর এখন এটা এক কেজি মাংসের দাম। এই কথা বললে নতুন প্রজন্ম বিশ্বাস করবে না। তবে এমন দিন গেছে। লাখ টাকার গরু কিনে নিয়ে গেলে আশপাশের মানুষ দেখতে এসেছে। আর এখন ৫ লাখ টাকা দামের গরু কিনলে মানুষ কিছুই মনে করে না।
নুরুল্লাহ মুন্সির হাটের ইজারাদারের হাসিল আদায়কারী মো. তুষার বলেন, খুবই জমজমাট ছিলো বাজার। হাটে বিভিন্ন আকারের পর্যাপ্ত কোরবানির পশু উঠে। দূর-দূরান্ত অনেক ক্রেতা-বিক্রেতারা এসেছে। তারা গরু কেনাবেচা করছেন। কেনাবেচা ভালোই হয়েছে।












