২৬ অক্টোবর ২০২৫

ভয় দেখিয়ে ভিডিও ধারণ, মাদ্রাসার বিরুদ্ধে যুবকের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জেরে বখতিয়ারপাড়া তরতীলুল কুরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানা নামক একটি মাদ্রাসা ও মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার ২য় শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে ভয় দেখিয়ে ভিডিও ধারণ করে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে মো. সেকান্দর হোসেন ও আসিফ নামের দুই যুবকের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় বুধবার (১০ জুলাই) মাদ্রাসা পরিচালক আবু হানিফা নোমান বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলো— উপজেলার পশ্চিমচাল (পাহাড়তলী) গ্রামের মো. সেকান্দর হোসেন (৩৫) ও আসিফ (২৮)।

লিখিত অভিযোগে মাদ্রাসা পরিচালক আবু হানিফা নোমান বলেন, গত ৬ জুলাই (শনিবার) সন্ধ্যায় আমার মাদ্রাসার ২য় শ্রেণীর আবাসিক শিক্ষার্থী মুন্নাকে (১১) মাদ্রাসায় না পেয়ে খুঁজাখুঁজি করে খবর পায় অভিযুক্ত সেকান্দর আলীর দোকানে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহায়তায় শিক্ষার্থী মুন্নাকে উদ্ধার করে মাদ্রাসায় নিয়ে আসি। পরবর্তীতে জানতে পারি যে আটকা রাখা অবস্থায় অভিযুক্ত সেকান্দর বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে শিক্ষার্থীটির মুখ থেকে মাদ্রাসার শিক্ষক সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মিথ্যা মন্তব্য প্রধান করতে বাধ্য করে যা ভিডিও ধারণ করে বিভিন্ন মাধ্যমে তা প্রচার করে মাদ্রাসার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে সেকান্দর।

দেখা যায়, অভিযুক্তের ফোনে ধারণকৃত ভিডিওতে শিক্ষার্থী মুন্না বলেন, ‘দুপুরে আসার পর শিহাব হুজুর আমার আম্মুর সাথে বিয়াদবী করেছে।’

তবে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে শিশুটি জানায়, ‘আমার আম্মু শনিবার বিকেলে আমাকে বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় নিয়ে আসে, তবে আমার ভালো লাগছিল না তাই আমি সন্ধ্যায় মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলাম এমন সময় একটা লোক আমাকে বসিয়ে আমার আম্মুর এবং হুজুরের নামে এসব কথা বলতে বলে এবং তারা এসব ভিডিও করে। আমি ভয়ে এসব বলেছি, এগুলো সব মিথ্যা কথা।’

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা জানান, কোরবানির বন্ধতে আমার ছেলেকে খৎনা করাই। যার কারণে মাদ্রাসার খোলার তারিখে সে আসতে পারেনি। শনিবার বিকেলে তাকে আমি মাদ্রাসায় নিয়ে আসি। পরবর্তীতে সেদিন সন্ধ্যায় সেকান্দর নামের একজন লোক ফোন করে জানায় যে আমার ছেলে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে আমাকে আসতে হবে। আমি বললাম রাতে বাঁশখালী থেকে আমার যাওয়া সম্ভব না, মাদ্রাসার হুজুরদের কাছে আপনারা আমার ছেলেকে দিয়ে দেন। এর আগেও আমার ছেলে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে গিয়েছিল, যার কারণে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি নিতে না চাওয়া সত্ত্বেও মাদ্রাসার পড়াশোনা ভালো হওয়ায় আমি জোর করে মাদ্রাসায় ভর্তি করায়। যারা আমার ছেলেকে ভয় দেখিয়ে আমার এবং মাদ্রাসার সম্মান নষ্ট করার জন্য এই ধরনের মিথ্যা ভিডিও বানিয়েছে আমি তাদের শাস্তি চাই।

মাদ্রাসা পরিচালক আবু হানিফা নোমান জানান, সেকান্দর নামের মাদ্রাসার পাশের বাসিন্দা এক যুবকের সাথে মাদ্রাসার বিভিন্ন বিষয়ে ঝামেলা ছিল। যার কারণে সে বিভিন্ন সময় মাদ্রাসার ক্ষতি করার চেষ্টা করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার আমার মাদ্রাসার পালিয়ে যাওয়া এক শিক্ষার্থীকে জোর করে সে মিথ্যা ভিডিও তৈরি করে মাদ্রাসার সম্মান ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করছে। আর যে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে সে শিক্ষকও ঘটনার দিন ছুটিতে ছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত যুবক মো. সেকান্দর হোসেনের ফোনে একাধিক নম্বর থেকে কল করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহেল আহাম্মদ বলেন, একটা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন