পাকিস্তানের বিপক্ষে কখনই টেস্টে জয় ছিল না বাংলাদেশের। আগের ১৩ টেস্টের মুখোমুখি দেখায় ১২ ম্যাচে হারের বিপরীতে টাইগাররা মাত্র একটি ম্যাচ ড্র করেছিল। অবশেষে পাকিস্তানের বিপক্ষে অধরা সেই জয় ধরা দিয়েছে। সেটাও আবার প্রতিপক্ষের ঘরের মাঠে। ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জয়ে দুই ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল নাজমুল হোসেন শান্ত ব্রিগেড।
রাওয়ালপিন্ডিতে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছিল পাকিস্তান। জবাবে প্রথম ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৫৬৫ রান করে বাংলাদেশ। ১১৭ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৬ রানের বেশি করতে পারেনি স্বাগতিকরা। ৩০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়েই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ১০ উইকেটে জয়। দেশের বাইরে বাংলাদেশের এটি মাত্র সপ্তম জয়, সব মিলিয়ে ২০তম। এছাড়া পাকিস্তান নবম প্রতিপক্ষ যাদের টেস্টে হারাল বাংলাদেশ। এখন শুধু ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় বাকি থাকল টাইগারদের।
১ উইকেটে ২৩ রান নিয়ে পঞ্চম দিনে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছিল পাকিস্তান। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই পাকিস্তান শিবিরে আঘান হানেন পেসার হাসান মাহমুদ। স্বাগতিক অধিনায়ক শান মাসুদকে লিটন দাসের ক্যাচে পরিণত করেন ডানহাতি এই পেসার। আম্পায়ার জোরাল আবেদনে সাড়া না দিলেও রিভিউতে মেলে ব্যাটের কানা স্পর্শের প্রমাণ। বিদায়ের আগে ১৪ রান করেন মাসুদ।
এরপর প্রথম ইনিংসের মতো এবারও শূন্য রানে ফিরতে পারতেন বাবর আজম। তবে লিটনই পরের ওভারে শরীফুলের বলে বাবরের সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন। অবশ্য জীবন পাওয়ার পরও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি বাবর। দলীয় ৬৬ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরে যান সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার। নাহিদ রানার অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল কাভার ড্রাইভ করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে আঘাত হানে লেগ স্টাম্পে। ৫০ বলে ২২ রান করেন বাবর।
পরের ওভারেই প্রথম ইনিংসে ১৪১ রানের ইনিংস খেলা সাউদ শাকিলকে শূন্য রানে ফেরান সাকিব। তবে একপ্রান্ত আগলে ধরে রেখেছিলেন ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক। রিজওয়ানকে নিয়ে এই ব্যাটার দলের সংগ্রহ শতরান পার করেন। দলীয় ১০৪ রানের মাথায় আবারও সাকিবের আঘাত। শফিককে সাদমানের ক্যাচে পরিনত করে দলকে পঞ্চম উইকেট এনে দেন। ডানহাতি এই ওপেনার করেন ৩৭ রান।
আর পরের ওভারেই আগা সালমানকে শূন্যহাতে ফিরিয়ে দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এতে লাঞ্চ বিরতির আগেই ১০৮ রানে ৬ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে যেখানে শেষ করেছিলেন, বিরতি থেকে ফিরে সেখান থেকেই শুরু করলেন মিরাজ। ঠিকঠাক ব্যাটে লাগাতে পারেননি শাহিন আফ্রিদি। বল গিয়ে আঘাত হানে প্যাডে। এলবিডব্লু হয়ে ফিরেছেন শাহিন।
মিরাজের পর আবারও উইকেটের উৎসব সাকিবের। হাওয়ায় ভাসানো বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে মুশফিকের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দেন। বাকি কাজটা একাই সারলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। একে একে ফেরালেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও মোহাম্মদ আলিকে। সাকিব ও মিরাজ দুজনে মিলেই নিলেন ৭ উইকেট। বাকি তিনটি উইকেট শিকার করেছেন যথাক্রমে শরিফুল, হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা।













