১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

শিক্ষকের গায়ে কেরোসিন, ইন্ধনদাতাদের গ্রেফতারের নির্দেশ নওফেলের

বাংলাধারা প্রতিবেদন »

নগরীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজির (ইউএসটিসি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদের গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টায় ইন্ধনদাতাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এ ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমানকে ফোন করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসিতে সংঘটিত ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান উপমন্ত্রী নওফেল।

সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান বলেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহোদয় ফোন করে ইউএসটিসি’র ঘটনা এবং এর প্রেক্ষিতে পুলিশ কি করেছে সেটা জানতে চেয়েছেন। আমি একজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানিয়েছি। এই ঘটনায় গ্রেফতার আসামির সঙ্গে আরও কেউ জড়িত ছিল কি-না, ইন্ধন কে বা কারা দিয়েছে সেটা তদন্তের জন্য বলেছেন উপমন্ত্রী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের ঘটনার পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না সেটাও তদন্ত করতে বলেছেন তিনি।

জানতে চাইলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, মাসুদ মাহমুদ একজন শিক্ষক এবং সমাজের শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। উনার সঙ্গে যে ঘটনা হয়েছে, এটা গুরুতর অপরাধ। এর সঙ্গে জড়িতরা যেন কোনোভাবেই ছাড় না পায়, সেটা আমরা অবশ্যই নিশ্চিত করব। এর সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে-বাইরে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, পুলিশকে তাদের খুঁজে বের করে গ্রেফতার করতে বলেছি। শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষা এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমরা কোনো আপস করবো না।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি, চট্টগ্রামের (ইউএসটিসি) ইংরেজি বিভাগের উপদেষ্টা অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদকে অফিস থেকে টেনে বের করে রাস্তায় নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে লাঞ্ছিত করে একদল শিক্ষার্থী। এরপর ওই শিক্ষার্থীরাই আবার নগরীর খুলশীতে ইউএসটিসি ক্যাম্পাসের সামনে প্রায় একঘন্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

এই ঘটনার পর ইউএসটিসি’র ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র মাহমুদুল হাসানকে (২২) ক্যাম্পাস থেকে গ্রেফতার করে নগরীর খুলশী থানা পুলিশ। ইউএসটিসি’র ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দিলীপ কুমার বড়ুয়া বাদি হয়ে শিক্ষককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় শুধুমাত্র মাহমুদুলকে আসামি করা হয়। আদালতের নির্দেশে মাহমুদুলকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

ইংরেজি সাহিত্যের কোর্স কারিকুলামের অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি কবিতা পড়াতে গিয়ে নারী-পুরুষের জৈবিক সম্পর্ক, পোশাক নিয়ে ক্লাসে নিয়মিত আলোচনা করেন শিক্ষক মাসুদ মাহমুদ। সেসব বিষয়কে যৌন হয়রানি হিসেবে অভিযোগ তুলে ইউএসটিসি’র একদল শিক্ষার্থী আন্দোলনে নেমেছিল।

অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৪০ বছর ধরে শিক্ষকতা করেন। সেখান থেকে অবসরের পর একবছর আগে তিনি ইউএসটিসিতে যোগ দেন।

বাংলাধারা/এফএস/এমআর/টিএম

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ