২৩ অক্টোবর ২০২৫

অর্থ-ই অনর্থের মূল

মানুষের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে চাহিদা।এই চাহিদা পূরণ করতে মানুষ পরিশ্রম করে যাচ্ছে দিনরাত। কর্মজীবনে কখনো কেউ উঁচু পদে থাকে কখনো বা নীচু পদে।পদ পদবির জোশে আমরা প্রায়ই ভুলে যায় নিচু পদের মানুষদেরও মন নামে একটি বস্তু রয়েছে।

একটি মানুষকে কখনোই তার পেশা দিয়ে মূল্যায়ন করা ঠিক নয়।তবে,আজকাল প্রায়ই দেখা যায় শুধু পেশার ভিত্তিতেও মানের ক্রমে একটা মানুষকে মূল্য দেওয়া হয়।ভেবে দেখেছি আসলে এর কারণ কী?উত্তরটা একটাই শুধু মাত্র টাকা। হ্যাঁ! টাকাই সুখ, খ্যাতি,জোশ এনে দেয়। জীবনে বাঁচার তাগিদে যেমন টাকার প্রয়োজন রয়েছে,তেমনিই সব অনর্থের মূলেই রয়েছে এই টাকা।

কথায় বলে, টাকা দিয়ে সব কেনা গেলেও সুখ কেনা যায় না। তবে একটি দিক এর যদি সম মূল্যায়ন করা যায় তবে এটাও জেনে রাখা জরুরি, যেকোনো সম্মানিত পেশা বা চাকরি একজন শিক্ষিত কে যতটুকু অর্থ মূল্যে মূল্যায়ন করে একজন অশিক্ষিত রিকশা শ্রমিক এর অর্থমুল্যায়ন বা উপার্জন টা আরো সম্মানজনক থাকে। উদাহরণ স্বরূপ একজন ১৩ তম গ্রেডের সরকারি কর্মচারীর উপার্জন আর শহরের একজন প্যাডেল রিকশা চালকের উপার্জনের যদি তুলনা করা হয় তবে অনেকসময় রিকশা ওয়ালা নিজেকে সমৃদ্ধ মনে করতেই পারেন। টাকা আপনাকে সব দিবে বিষয়টা এমন না, তবে টাকা বিহীন একটি সুষ্ঠু ও আলালি জীবনযাপন করবেন এটা ও সম্ভব না।
অঢেল টাকা আপনাকে সব দিবে সাথে আপনার মনের সুখ ও সর্বোপরি পরিপূর্ণ হবে এটা ভাবা মুশকিল। কারণ আপনার মনস্তাত্ত্বিক চাহিদা তখন ক্রমান্বয়ে বেড়েই যাবে।তবে একজন রিকশাচালক হাজার কোটি টাকা উপার্জনে তার বিন্দুমাত্র চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এর ব্যর্থতায় ঘটবে বিষয়টা তেমন ও না। জীবনটা কে টাকা পয়সা বা চাহিদা তে নিমজ্জিত করে না রেখে আসল চরিত্র চরিতার্থ করার জোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। দিনশেষে মানসিক শান্তিই মুখ্য,আর মানুষকে মানুষের চোখে দেখা উচিত কোন ধনকুবের বা মুচির চোখে নই! বিশ্বব্রম্মান্ডে শান্তি প্রতিষ্ঠার এটা অন্যতম প্রচেষ্টা হতে পারে!

আর তাই, আমাদের উচিত সবসময় অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকা,নিজেকে সংযত রাখা। পরিশেষে আপনাকে দেখে যদি কারো মুখে সন্তুষ্টির হাসি ফুটে ভেবে নিবেন ইহলোকের শ্রেষ্ট সাফল্য গুলোর মধ্যে একটি আপনার ঝুড়ি পরিপুর্ণ হতে নিজের সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ নিয়ে ফেলেছে।

লেখিকা: শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগ,
পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

আরও পড়ুন