চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড থানা এলাকায় বিকাশ এজেন্ট বিজয় কুমার বিশ্বাস হত্যার ঘটনায় এক ঠিকাদারকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় আরেক আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সিরাজাম মুনীরা এই রায় প্রদান করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আব্দুর রহমান (৪০) গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। অন্যদিকে, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামি নাছির উদ্দিনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর বিকেলে পাহাড়তলী থানার অলঙ্কার মোড় সংলগ্ন আলিফ গলি এলাকা থেকে বিজয় কুমার বিশ্বাসের লাশ ককশিট ও পেপারে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। বিজয় ইপিজেড থানার নেভি গেইট ওয়েল ফেয়ার মার্কেটের নিচতলায় একটি দোকান পরিচালনা করতেন।
তদন্তে জানা যায়, বিজয় এবং আব্দুর রহমান একে অপরকে চেনার সুবাদে আর্থিক লেনদেন করতেন। বিজয় প্রতিমাসে সাত হাজার টাকা লাভে আব্দুর রহমানকে দেড় লাখ টাকা ঋণ দিয়েছিলেন। কিন্তু ঋণ পরিশোধ নিয়ে দুজনের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়।
২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর আব্দুর রহমান টাকা পরিশোধের কথা বলে বিজয়কে তার প্রতিষ্ঠানে ডেকে নেন। সেখানে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে বিজয় অজ্ঞান হয়ে পড়লে গলায় ইন্টারনেটের তার পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে বিজয়ের লাশ বস্তায় ভরে ককশিট ও পেপার মুড়িয়ে অলংকার মোড়ের কাছে ফেলে দেওয়া হয়।
ঘটনার এক সপ্তাহ পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আব্দুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। পরে বিজয়ের ভাই সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস বাদী হয়ে পাহাড়তলী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০২১ সালের ১০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয় এবং ২০২২ সালের ২০ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় মোট ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর আদালত রায় দেন।
আদালত আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি, লাশ গুমের অভিযোগে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
অপরদিকে, নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে খালাস দেন। রায়ের সময় আব্দুর রহমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ এই রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।