২৪ অক্টোবর ২০২৫

১৮ বছর পর জন্মভিটায় যাচ্ছেন ড. ইউনূস, সাজ সাজ রব

“আরার ইউনূস চিটাগাং আইর, গ্রামত আইবো, খুশি লাগের”

“আরার ইউনূস চিটাগাং আইর, গ্রামত আইবো, খুশি লাগের”— এমন উচ্ছ্বাস এখন হাটহাজারীর বাথুয়া গ্রামের প্রতিটি মানুষে মানুষে। দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর পর বুধবার (১৪ মে) নিজ জন্মভূমি চট্টগ্রামে এবং নিজ গ্রামে আসছেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথম চট্টগ্রাম সফর করছেন তিনি।

বাথুয়া গ্রামজুড়ে এখন সাজ সাজ রব। চলছে উৎসবের প্রস্তুতি। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থাপন করা হয়েছে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প। প্রশাসনের পক্ষ থেকে চলছে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। ড. ইউনূসের আগমন উপলক্ষে স্থানীয়রা আনন্দে অভিভূত।

গ্রাম থেকে বিশ্বমঞ্চে, আবারও ফিরে আসছেন শিকড়ে, বাথুয়ায় প্রস্তুতি চূড়ান্ত

১৯৪০ সালের ২৮ জুন হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পিতা হাজী দুলা মিয়া এবং মাতা সুফিয়া খাতুনের সন্তান ইউনূস এখানকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। পরে পড়েন চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল ও চট্টগ্রাম কলেজে। তার প্রতিভা ফুটে উঠেছিল ছোটবেলা থেকেই নাটক, লেখালেখি ও সম্পাদনায়।

দীর্ঘ বছর পর তিনি আসছেন সেই প্রিয় গ্রাম এবং শিক্ষাজীবনের স্মৃতিমাখা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।

ড. ইউনূসের আগমন উপলক্ষে বাথুয়া গ্রামে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। গ্রামের বাসিন্দা শেখ হারুন বলেন, “ড. ইউনূস আমাদের গর্ব। বিশ্বজয় করে আমাদের গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন, এটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।”

স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম মশিউজ্জামান বলেন, “ড. ইউনূস বিকেলে গ্রামে এসে দাদা-দাদির কবর জিয়ারত করবেন এবং আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে দেখা করবেন। সেই অনুযায়ী আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছি।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন, জুলাই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠেয় পঞ্চম সমাবর্তনই ড. ইউনূসের সফরের প্রধান কর্মসূচি। এখানে তিনি প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেবেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, সমাবর্তনে জুলাই আন্দোলনে শহীদ শিক্ষার্থীদের স্মরণে থাকবে চিত্রপ্রদর্শনী, প্রামাণ্যচিত্র ও বিশেষ সংকলন।

চবি ভিসি ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, “জুলাই শহীদদের স্মরণে শিক্ষার্থীদের আঁকা গ্রাফিতি নিয়ে একটি সংকলন তৈরি করেছি, যা আমরা ড. ইউনূসকে উপহার দেব।”

চবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. এনায়েত উল্লা পাটোয়ারী জানান, “সমাবর্তন মাঠজুড়ে থাকবে শহীদদের ছবি ও পোস্টার। প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের উত্তরাধিকার প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দেওয়াই আমাদের উদ্দেশ্য।”

ড. ইউনূসের দিনের কর্মসূচি সংক্ষেপে

সকাল ১০টা: শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণ এরপর ১১টা: চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন ও বৈঠক। ১২টায় সার্কিট হাউস অবস্থান সেখান থেকে দুপুর দেড়টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনে যোগদান। বিকেল ৫টায় সড়কপথে বাথুয়া গ্রামে যাত্রা তারপর সন্ধ্যায় দাদা-দাদির কবর জিয়ারত, আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কুশল বিনিময় সবশেষে রাতেই ঢাকা প্রত্যাবর্তন।

এআরই/বাংলাধারা

আরও পড়ুন