দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হতে চলেছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের জন্য। কর্ণফুলী নদীর ওপর চট্টগ্রামের কালুরঘাটে নির্মিত হতে যাচ্ছে আধুনিক রেল–সড়ক সেতু। আগামী ১৪ মে (বুধবার) চট্টগ্রাম সফরে এসে এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন দেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে ব্যক্তিগতভাবে ড. ইউনূস ফলকে নিজের নাম রাখতে অনিচ্ছুক জানানো হয়েছে। ফলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ নামবিহীন ফলক তৈরি করছে।
এ উপলক্ষে বোয়ালখালী ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাসিন্দারা উচ্ছ্বসিত। দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফসল হিসেবে তারা এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সূচনায় আনন্দ মিছিল ও বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে।
১৫ মে (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টায় কালুরঘাট সেতুর পশ্চিম প্রান্ত থেকে শুরু হয়ে পূর্ব প্রান্তে গিয়ে শেষ হবে একটি আনন্দ মিছিল। এতে অংশ নেবে বোয়ালখালীর সর্বস্তরের নাগরিক সমাজ ও ‘বোয়ালখালী কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদ’।
নাগরিক সমাজের পক্ষে সৈয়দ জাকির হোসাইন ও সাংবাদিক মনজুর মোরশেদ এবং সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল মোমিন ও যুগ্ম আহ্বায়ক মুস্তফা নঈম সবার প্রতি মিছিলে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
১৬ মে (শুক্রবার) সেতু নির্মাণের জন্য শুকরিয়া আদায় এবং কাজ যেন সুন্দর ও দ্রুত সম্পন্ন হয়—এ উদ্দেশ্যে বোয়ালখালীর প্রতিটি মসজিদে জুমার নামাজের পর দোয়া ও বিশেষ মোনাজাতের অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতিও তাদের উপাসনালয়ে প্রার্থনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সেতু নির্মাণের অগ্রগতি ও পরিকল্পনা
২০২৪ সালে একনেক সভায় এই প্রকল্প অনুমোদন পায়। বর্তমানে পরামর্শক নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, যেখানে দেশি–বিদেশি আটটি প্রতিষ্ঠান ইওআই দাখিল করেছে। দুই ধাপে পরামর্শক নিয়োগ সম্পন্ন করে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি মূল নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুর নদীর ওপরে মূল অংশ হবে ৭০০ মিটার। উভয় পাশে সাড়ে চার কিলোমিটার করে ভায়াডাক্ট নির্মাণ করা হবে। সেতুর মোট প্রস্থ ১০০ ফুট। এক পাশে ডুয়াল গেজ রেলপথ এবং অন্য পাশে ১৮ ফুট চওড়া দুটি লেনবিশিষ্ট সড়ক, সঙ্গে পাঁচ ফুট করে সার্ভিস লেন ও পথচারীদের জন্য ব্যবস্থা থাকবে।
নদীর ওপর পাঁচটি স্প্যানসহ মোট সাতটি স্প্যান নিয়ে এক্সট্রা ডোজ টাইপ সেতুটি নির্মিত হবে। প্রকল্পটি ২০৩০ সালের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্য রয়েছে।
এআরই/বাংলাধারা