চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলনের আমন্ত্রণ জানিয়ে উপস্থিত না হয়ে সাংবাদিকদের অপেক্ষায় রেখে বিতর্কের মুখে পড়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (বৈছাআ) চট্টগ্রাম মহানগর শাখা। সংবাদ সম্মেলনে না গিয়ে পরে ক্ষুদেবার্তায় তা বাতিলের কথা জানানোয় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন উপস্থিত সংবাদকর্মীরা।
রবিবার (১৯ মে) রাত ১১টায় বৈছাআ নগর কমিটির সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন এক বার্তায় সাংবাদিকদের জানান, সোমবার (২০ মে) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ‘সমসাময়িক বিষয় ও জুলাইয়ের নারী যোদ্ধাদের’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
ঘোষিত সময় অনুযায়ী সকাল ১১টার আগেই চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে পৌঁছান বিভিন্ন টিভি, পত্রিকা ও অনলাইন মাধ্যমের সাংবাদিকরা। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও বৈছাআ’র কোনো প্রতিনিধি সেখানে উপস্থিত হননি। প্রায় আধঘণ্টা অপেক্ষার পর সাংবাদিকরা যোগাযোগ করলে হোয়াটসঅ্যাপে জানানো হয়, সংবাদ সম্মেলন হচ্ছে না।
সংগঠনের নগর কমিটির সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে লিখেন, “প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ, প্রথমে দুঃখ প্রকাশ করছি। আজ ১১টায় যে সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল, তা হচ্ছে না। আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ বহিষ্কৃত তিনজনকে ঢাকা যেতে বলা হয়েছে, সে কারণে বাতিল করা হয়েছে।”
‘সেটি আগেই জানিয়ে দেওয়া উচিত ছিল’ ক্ষোভ জানালে তিনি আবারও লিখেন, ‘ঢাকা থেকে জানাতে দেরি করে ফেলেছে।’
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রতিক্রিয়া ছিল তীব্র ।তারা বলেন, “এ ধরনের আচরণ শুধু সংবাদমাধ্যমের প্রতি অবজ্ঞাই নয়, বরং সংগঠনের অগভীরতা ও সাংগঠনিক দুর্বলতাও প্রমাণ করে।”
উপস্থিত এক টেলিভিশন সাংবাদিক বলেন, “সংবাদ সম্মেলন বাতিল হলে আগেই জানানো উচিত ছিল। সাংবাদিকদের বসিয়ে রেখে পরে প্রশ্নের উত্তরে জানানো অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ।”
বিতর্কিত বহিষ্কার ও আইনি লড়াই
প্রসঙ্গত, বৈছাআ সম্প্রতি চট্টগ্রাম নগর শাখার তিন নেতাকে বহিষ্কার করেছে। গত ১৭ মে সংগঠনের পক্ষ থেকে নারী মুখপাত্র ফাতেমা আক্তার লিজাকে মাদক সেবন ও অশালীন ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে যুগ্ম সদস্য সচিব আবুল বাছির নাঈম এবং সংগঠক শাহরিয়ার সিকদারকে চাঁদাবাজি ও পুলিশের হাতে আটকের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়।
বহিষ্কারের পরদিন লিজা তা প্রত্যাখ্যান করে আইনি নোটিশ পাঠান সংগঠনের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের কাছে। তিনি এটিকে ‘চরিত্র হননের চেষ্টা’ হিসেবে উল্লেখ করে সাত দিনের মধ্যে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও গণমাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তা না হলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দেন তিনি।
এআরই/বাংলাধারা