২৪ অক্টোবর ২০২৫

মোহরায় ১৭ ঘণ্টা পর মিলল শিশু মিনহাজের লাশ

চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ের মোহরা এলাকায় বন্যার পানিতে নিখোঁজ হওয়ার ১৭ ঘণ্টা পর মিনহাজ (১০) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২০ মে) সকালে পাশের একটি পুকুর থেকে ভেসে ওঠা অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার (১৯ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বাসা থেকে বের হয় মিনহাজ। এরপর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবার ও এলাকাবাসী রাতভর খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পাননি। শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে স্থানীয় এক নারী পুকুরে শিশুটির মরদেহ দেখতে পান এবং বিষয়টি আশপাশের লোকজনকে জানান। পরে মিনহাজকে শনাক্ত করেন তার স্বজনরা।

মিনহাজ মোহরা এলাকার কাছিম মাঝির বাড়ির বাসিন্দা আব্দুস শুক্কুর ও ছাম্বা আক্তারের একমাত্র সন্তান। শিশুটির মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. কাইয়ুম বলেন, ‘‘এই পুকুরে সাধারণত এত পানি থাকে না। কিন্তু টানা বৃষ্টি ও বন্যার কারণে এখন পুকুর উপচে উঠেছে। পানির কারণেই হয়তো শিশুটি পুকুরে পড়ে গিয়ে ডুবে যায়।’’

এর আগে একই এলাকায় ঘরে জোয়ারের পানি ঢুকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. মোবারক নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জসীম উদ্দীন সরকার বলেন, বর্ষাকালে মোহরা এলাকায় বন্যা ও জোয়ারের পানি ঢুকে নিয়মিত সমস্যা তৈরি করে। রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে যায়। বিশেষ করে কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের পর থেকে এ সমস্যা আরও বেড়েছে।

তিনি আরও জানান, হালদা নদীর তীরবর্তী এলাকায় পানি নিয়ন্ত্রণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্প ছয় বছর ধরে চলমান রয়েছে, যার মেয়াদ ২০২২ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও কাজ শেষ হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও জলাবদ্ধতা নিরসনে ‘হালদা নদীর তীর রক্ষা ও নিষ্কাশন উন্নয়ন প্রকল্প’ এখনো চলমান রয়েছে। প্রকল্পের ৪৩ শতাংশ ভৌত কাজ এবং ২৬.৫৯ শতাংশ অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্পন্ন হয়েছে। করোনার কারণে কাজ বিলম্ব হয়েছে, তাই প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আশা প্রকাশ করেন, “পরবর্তী বর্ষার আগেই হালদা নদী তীরবর্তী এলাকা বন্যা নিয়ন্ত্রণে আসবে।”

এআরই/জেএফআই/বাংলাধারা

আরও পড়ুন