শাটলের স্টেশনে ধুলো ওড়ানো বাতাসে যেন লেগে আছে ঈদের শেষ প্রহরের স্মৃতি। কারো চোখে জল, কারো মুখে ক্লান্ত হাসি। কেউ এক হাতে ট্রলি টেনে নিয়ে চলেছে, কেউ ব্যাগ কাঁধে ফেলে চেনা পথ ধরে হাঁটছে নিঃশব্দে। দীর্ঘ ছুটি শেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আবারও জেগে উঠছে আপন ছন্দে।
ঈদুল আজহার ছুটিতে নিরব হয়ে যাওয়া সবুজে ঘেরা এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এখন আবারও মুখরিত। প্রতিটি ধাপে, প্রতিটি মোড়ে যেন ফিরে এসেছে সেই পুরোনো চেনা ব্যস্ততা। জিরো পয়েন্টের পাশ দিয়ে রিকশা চলাচল বাড়ছে, ঝুপড়িতে দেখা মিলছে পরিচিত মুখগুলোর।
ভিন্ন ভিন্ন জেলা থেকে ফেরত আসা শিক্ষার্থীরা কেউ কেউ এখনও ঘুমচোখে, কেউ আবার বন্ধুদের দেখে উচ্ছ্বাসে চিৎকার করে জড়িয়ে ধরছে। কারো ব্যাগে মায়ের রান্না করা সেমাই, কারো ফোনে এখনও রয়ে গেছে গ্রামের উঠোনে তোলা ছবি।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মায়েশা ফাহমিদা জানালেন, “ঈদের ছুটি মানেই মায়ের কোলে ঘুম, বিকেলে পাড়ার গলিতে ঘোরা। কিন্তু ফিরতে তো হবেই এই ক্যাম্পাসে। আমাদের স্বপ্ন বোনা, দায়িত্ব পালন এখানেই তো বড় হওয়ার গল্পটা চলছে।”
রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী কুমকুম জানালেন,“ঈদের সময়টা পরিবারের সঙ্গে কাটিয়ে মনটা শান্ত ছিল, কিন্তু ক্যাম্পাসে ফিরেই আবার যেন সবকিছু গতি পেল। ট্রেন থেকে নামার পর পরিচিত চেহারা দেখে যে অনুভূতি হয় ওটা সত্যিই আলাদা। ক্লাস, টিউশন সব মিলিয়ে রুটিনটা কঠিন হলেও, চবির পরিবেশই যেন নতুন করে এগিয়ে চলার শক্তি দেয়।”
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যেন আবার নিজের ছেলেমেয়েদের বুক ভরে টেনে নিয়েছে। ঈদের আনন্দের জায়গা নিয়েছে এখন বাস্তবের রুটিন, কিন্তু তার মধ্যেও রয়েছে এক ধরনের তৃপ্তি,ফেরার তৃপ্তি।
এআরই/পিএন/বাংলাধারা