জীবন বাজি রেখে যারা বন পাহারা দেয়, তাদের কুর্নিশ জানাচ্ছে উপকূলবাসী। যখন একটি চক্র রাতের আঁধারে সুন্দরবনের নিরীহ প্রাণীদের জন্য মৃত্যুফাঁদ পাতে, তখন গহীন অরণ্যে পায়ে হেঁটে অভিযানে নামে বাংলাদেশ বন বিভাগের একদল সাহসী সৈনিক।
শনিবার (০২ আগস্ট) সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চাঁদপাই স্টেশন রেঞ্জ কর্মকর্তা মিল্টন রায়ের নেতৃত্বে একটি টহল দল মরা পশুর টহল ফাঁড়ির আওতাধীন বড় কঞ্চি সংলগ্ন বনাঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করে। পায়ে হেঁটে ঘন জঙ্গলে প্রায় ৫০০ মিটার অগ্রসর হয়ে উদ্ধার করা হয় হরিণ শিকারের জন্য ব্যবহৃত বিপজ্জনক “মালা ফাঁদ”।
উদ্ধারকৃত ফাঁদগুলো ঘটনাস্থলেই বন আইনের বিধান অনুসারে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
চাঁদপাই রেঞ্জ স্টেশন কর্মকর্তা মিল্টন রায় বলেন, “আমরা কোনো অবস্থাতেই হরিণ শিকারিদের ছাড় দেব না। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও সুন্দরবনের প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় আমরা অটল।”
এ অভিযানে অংশ নেওয়া বনরক্ষীরা তাদের সীমিত সামর্থ্য, প্রতিকূল আবহাওয়া এবং প্রতিনিয়ত শিকারিদের হুমকি উপেক্ষা করে যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন—তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। তারা শুধু একটি বন নয়, গোটা জাতির ভবিষ্যৎ রক্ষায় দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।
সাধারণ মানুষ যখন নির্ভয়ে ঘুমায়, তখন এই নীরব যোদ্ধারাই হরিণ, বাঘ, কুমির ও অজস্র প্রাণীর পাহারায় থাকেন।
চাঁদপাই স্টেশনের টিমের এই উদ্যোগে বনরক্ষীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন উপকূলের সচেতন নাগরিকরা। তাদের নিরলস পরিশ্রম আর আন্তরিকতার কারণেই আজও টিকে আছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন।