চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহন কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। শনিবার (১৬ আগস্ট) চট্টগ্রামের পতেঙ্গা গুপ্তখাল এলাকার পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডেসপাস টার্মিনালে এর উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) জানিয়েছে, ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ পাইপলাইনের মাধ্যমে বছরে প্রায় ২৭ লাখ টন ডিজেল ঢাকায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে। পাইপলাইন ব্যবহারে বছরে অন্তত ২০০ কোটি টাকা পরিবহন খরচ কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০১৬ সালে প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয় এবং ২০১৮ সালে কাজ শুরু হয়। তিন দফা সময় বাড়ানোর পর চলতি বছরের মার্চে কাজ শেষ হয়। প্রথমে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা, তবে শেষ পর্যন্ত প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়ায় প্রায় ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা। সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড কাজটি বাস্তবায়ন করেছে।
প্রকল্প পরিচালক আমিনুল হক জানান, গত দেড় মাস ধরে পরীক্ষামূলকভাবে ডিজেল সরবরাহ করা হয়েছে। ২২ জুন থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত পাইপলাইনে প্রায় ৪ কোটি ৮২ লাখ লিটার তেল ঢাকায় পৌঁছানো হয়েছে। বর্তমানে পতেঙ্গা থেকে গোদনাইলে ৫০ লাখ লিটার ডিজেল পরিবহনে সময় লাগছে মাত্র ১২ ঘণ্টা, যেখানে আগে নৌপথে লাগতো দুই দিন।
এর আগে চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে তেল আনা হতো নদীপথে, সেখান থেকে ট্রাকে করে ঢাকায় সরবরাহ করা হতো। নতুন পাইপলাইন চালু হওয়ায় এ খরচ কমবে উল্লেখযোগ্যভাবে।
প্রতি বছর প্রকল্প থেকে প্রায় ৩২৬ কোটি টাকা আয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে ৯০ কোটি টাকা পরিচালন ব্যয় বাদ দিলে নিট সাশ্রয় হবে ২৩৬ কোটি টাকা।
পাইপলাইন চালু হওয়ায় দ্রুত ও নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ সম্ভব হবে। প্রতিকূল আবহাওয়া বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ও তেল পরিবহন অব্যাহত রাখা যাবে। এছাড়া পরিবেশ দূষণ রোধ ও সিস্টেম লস কমাতেও সহায়ক হবে এই উদ্যোগ।