মিরসরাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে মোহাম্মদ শাহেদ (২৪) হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি বাবা মো. নুরুজ্জামান (৬৫) ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৭)। পরে তাঁদেরকে আদালতে হাজির করলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ দুইজনেরই দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা থানার বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে নুরুজ্জামানকে এবং একই এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে দ্বিতীয় স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে র্যাব-৭ ও র্যাব-৯ যৌথ অভিযানে গ্রেফতার করে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দ্বিতীয় স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে ঘরে তোলা নিয়ে বিরোধের জের ধরেই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে শাহেদ খুন হন।
নুরুজ্জামান প্রায় ১৫ বছর ধরে সৌদি আরবে বসবাস করেন। তাঁর স্ত্রী কামরুজ্জাহান দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে চট্টগ্রাম নগরে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
এদিকে দুই মেয়েরই বিয়ে সম্পন্ন হয়। সর্বশেষ গত ১১ আগস্ট ছোট মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে নুরুজ্জামান দেশে আসেন। তখন তিনি “বন্ধুর স্ত্রী” পরিচয়ে সিলেটের আনোয়ারা বেগমকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। বিষয়টি নিয়ে পরিবারে অশান্তি শুরু হয়। পরবর্তীতে গত ৯ সেপ্টেম্বর ওই নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তোলেন তিনি।
এ নিয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হলে ১০ সেপ্টেম্বর মিরসরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন কামরুজ্জাহান। পরদিন সন্ধ্যায় ঘরে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে নুরুজ্জামান হাতে থাকা ছুরি দিয়ে ছেলে শাহেদকে বুকে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর নিহতের মা কামরুজ্জাহান বাদী হয়ে স্বামী নুরুজ্জামানকে প্রধান আসামি ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে ২ নম্বর আসামি করে মিরসরাই থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকেই তারা পলাতক ছিলেন।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান বলেন, “হত্যার পর নুরুজ্জামান ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী আত্মগোপনে চলে যান। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাদের অবস্থান শনাক্ত করে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মিরসরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুল ইসলাম আরমান বলেন, “মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত আসামিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে আদালতে তোলা হলে বিচারক দুজনেরই দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।”













