দীর্ঘ ভোগান্তির অবসান ঘটাতে অবশেষে শুরু হয়েছে লক্ষ্মীপুর শহরসহ আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সংস্কার কাজ। প্রায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ খানাখন্দভরা এ সড়ক এখন মেরামতের আওতায় এসেছে।
বর্ষাকালে অতিবৃষ্টি ও যানবাহনের চাপের কারণে সড়কের বেহাল দশা তৈরি হয়েছিল। একসময় এ পথে চলাচল করা ছিল আতঙ্কের বিষয়। প্রতিদিন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতেন। প্রতিবেদক নিজেও একাধিকবার বাসে সিট থেকে সটকে পড়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। তবে বর্তমানে চিত্র ভিন্ন সংস্কার কাজ দৃশ্যমান হওয়ায় স্বস্তি ফিরে এসেছে মানুষের মনে।
স্থানীয়রা বলছেন, “দীর্ঘদিন কষ্ট করেছি। এখন কাজ শুরু হওয়ায় মনে হচ্ছে স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে।”
সংস্কার কাজে সচেষ্ট সড়ক বিভাগ
লক্ষ্মীপুর সড়ক বিভাগ ইতোমধ্যেই ভাঙাচোরা অংশ কেটে ফেলা, নতুন বিটুমিন কার্পেট বসানো এবং ড্রেনেজে পানিনিষ্কাশন নিশ্চিত করার কাজে হাত দিয়েছে। শ্রমিকরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিরলসভাবে কাজ করছেন।
উপসহকারী প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন জানান, “বর্ষার অতিবৃষ্টিতে সড়কের অনেক অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। জনগণের দুর্ভোগ কমাতে দ্রুত রিপেয়ারিংয়ের কাজ হাতে নিয়েছি। আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।”
অন্যদিকে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম জানান, লক্ষ্মীপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে চন্দ্রগঞ্জ পর্যন্ত সড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করার জন্য ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। টেকনিক্যাল মূল্যায়ন প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে বড় আকারে উন্নয়ন কাজ শুরু হবে। এদিকে জরুরি প্রয়োজন বিবেচনায় অস্থায়ী সংস্কার কার্যক্রম চলছে।
স্বস্তির নিঃশ্বাস স্থানীয়দের
সংস্কার কাজে আনন্দ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় দোকানদার আব্দুল কাদের বলেন, “আগে প্রতিদিন দুর্ঘটনার শঙ্কায় থাকতাম, ক্রেতারাও দোকানে আসতে চাইত না। রাস্তা ঠিক হলে ব্যবসায় গতি আসবে।”
স্কুলছাত্রী সুমাইয়া আক্তার জানায়, “প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার সময় ভয় পেতাম, পড়ে যাব কি না! এখন রাস্তা মেরামত হচ্ছে দেখে ভালো লাগছে।”
ভবিষ্যতের প্রত্যাশা
সাধারণ মানুষ আশা করছেন, শুধু অস্থায়ী সংস্কার নয় ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় সড়ক বিভাগ কাজ করবে। যাতে অতিবৃষ্টি বা যানবাহনের চাপেও সড়ক দ্রুত নষ্ট না হয়। একই সঙ্গে ড্রেনেজ উন্নয়ন, রাস্তার দুপাশে আলো স্থাপন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।













